ফের নক্ষত্রপতন ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে। চলে গেলেন ওড়িয়া ছবির অন্যতম জনপ্রিয় তারকা বিজয় মোহান্তি। সোমবার রাতে প্রয়াত হলেন এই বর্ষীয়ান তারকা। এদিন বাড়িতেই তাঁর শারিরীক পরিস্থিতির আচমকা অবনতি ঘটে। তাঁকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
চলতি বছর মে মাসে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলেন মোহান্তি। সেই সময় হায়দরাবাদে ছিলেন অভিনেতা। সেখানকার এক হাসপাতালে একটানা ১৫ দিন ধরে চিকিত্সা চলে তাঁর। গত মাসেই ওড়িশা ফেরেন বিজয় মোহান্তি। ৭০ বছরের এই অভিনেতা রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী তন্দ্রা রায় এবং মেয়ে জ্যাসমিন মোহান্তিকে।
বিজয় মোহান্তির মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ তাঁর সহকর্মী,বন্ধুরা। টুইট বার্তায় শোকপ্রকাশ করেছেন সব্যসাচী মিশ্রা সহ ওড়িয়া ছবির জগতের সঙ্গে যুক্ত বহু কলাকুশলী। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে আজ বিজয় মোহান্তির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ওড়িশা সরকার।
নাশ্যানাল স্কুল অফ ড্রামার প্রাক্তনী এই অভিনেতা। ওম পুরী, নাসিরুদ্দিন শাহ, রাজ বব্বররা ছিলেন তাঁর সহপাঠী। তবে এঁদের মতো বলিউডে গিয়ে হিন্দি ছবির দুনিয়ায় নিজের নাম করতে চাননি বিজয় মোহান্তি। নিজের মাতৃভাষা ওড়িয়া ছবিতেই কেরিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৭ সালে 'চিল্কা তীরে' ছিল তাঁর প্রথম ছবি, যেখানে মত্স্যজীবীর ভূমিকায় নজর কেড়েছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে এই ছবি জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ৩০০-র বেশি ওড়িয়া ছবিতে অভিনয় করেছেন বিজয় মোহান্তি। কাজ করেছেন টলিগঞ্জের ছবিতেও। প্রায় ৪০ টি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন বিজয় মোহান্তি। ওড়িয়া ছবির প্রতি তাঁর অবদানের জন্য রাজ্যের তরফে ছয়টি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। কেরিয়ারে প্রথম ওড়িয়া ছবি,'কথা দেইথিলি মা কু' তে বিজয় মোহান্তির সঙ্গে কাজ করেছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।অভিনেতার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন টলি কুইন।
অভিনয় কেরিয়ার একদিকে যেমন জারি রেখেছিলেন তেমন নতুন প্রজন্মকে অভিনয় শেখানোর কাজেও ব্রতী ছিলেন বিজয় মোহান্তি। ১৯৭৭ সাল থেকে উত্সকল সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের ড্রামা ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন বিজয় মোহান্তি। যদিও সফল ছিল না তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার। সেই বছর কংগ্রেসের টিকিটে ভূবনেশ্বর লোকসভা আসনের জন্য লড়াই করলেও হেরে যান তিনি। এরপরই রাজনীতির সঙ্গে সবরকম পাঠ চুকিয়ে ফেলেন এই তারকা।