এই মুহূর্তে ভিকি কৌশলের ‘তৌবা তৌবা’র তালে নাচছে গোটা দেশ। ‘মাসান’-এর কেরিয়ার শুরু করা লম্বা, কালো ছেলেটা আজ গোটা দেশের ফেভারিট নায়ক। সবচেয়ে বড় কথা, ক্যাটরিনা কাইফের মতো সুন্দরী তাঁকে বেছে নিয়েছেন জীবনসঙ্গী হিসাবে। তবে অতীত স্মৃতি সবসময় সুখের হয় না।
ভিকি আক্ষরিক অর্থে বলিউডের ‘আউটসাইডার’ নন। তাঁর বাবা, শ্যাম কৌশল অ্যাকশন ডিরেক্টর। ছোট থেকেই শাহরুখ, সলমনদের কাছ থেকে দেখেছেন ভিকি। তবে বলিউডে কাজ শুরুর আগে লম্বা সময় ভিকির বাবা বেকার ছিলেন। আর্থিক দুরাবস্থার জেরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে নিজেকে শেষ করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি রাজ শামানিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভিকি বাবার এই জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। আপতত ব্যাড নিউজের প্রচারে ব্যস্ত তারকা।
‘আমাদের কোনও জমি ছিল না’
ভিকি হিন্দিতে বলেছিলেন, ‘আমার বাবা-মা আমার ৯-৫টার চাকরি করার ধারণায় খুব খুশি হয়েছিলেন। পাঞ্জাবে আমাদের গ্রামে আমার ঠাকুরদার একটা মুদির দোকান ছিল। সেখান থেকেই আমার বাবা-মা এসেছেন। বাবা ১৯৭৮ সালে মুম্বাই এসেছিলেন। ইংরেজি সাহিত্যে এমএ করলেও তিনি তখন বেকার। ওখানে (পঞ্জাবে) আমাদের কোনও জমি ছিল না। একদিন, তার বন্ধুদের সাথে মদ্যপানের পরে, বাবা ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আত্মহত্যা করতে চান। আমার দাদু খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন, তাই তিনি তাকে এক বন্ধুর সাথে বাবাকে মুম্বাই পাঠিয়েছিলেন’।
‘আমার বাবার যৌবন ছিল সংগ্রামে ভরা’
ভিকি আরও বলেন, ‘মুম্বাইয়ে আমার বাবা ঝাড়ুদারের কাজও করতে রাজি ছিলেন, কারণ তিনি জানতেন যে গ্রামের কেউ জানতে পারবে না। বাবার যৌবন ছিল সংগ্রামে ভরা। এ ক্ষেত্রে চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। আপনি যখন একটি প্রকল্পে কাজ করছেন, আপনি ভাবছেন যে আপনি পরবর্তী কিছু খুঁজে পাবেন কিনা। আমার পরিবার সত্যিই খুব খুশি ছিল যে অবশেষে কেউ একটি স্থিতিশীল আয়, চাকরির সুরক্ষা, ছুটির দিন পেতে চলেছে। তিনি (আমার বাবা) খুব খুশি হয়েছিলেন। তার মনে হচ্ছিল অবশেষে তার সংগ্রাম ফলপ্রসূ হয়েছে। কিন্তু আমি শুধু এটুকু জানতাম যে আমি প্রচলিত ৯টা-৫টা কাজ করতে পারব না। আমার অফার লেটার ছিল, আমি ভাল নম্বর নিয়ে পাশ করেছি.. তবে আমি জানতাম যে আমি যদি এটি চালিয়ে যাই তবে আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ব’।
শামের চলচ্চিত্র কর্মজীবন
১৯৯০ সালে স্বাধীন অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসাবে বড় ব্রেক পাওয়ার আগে বহু বছর ধরে স্টান্টম্যান হিসাবে কাজ করেছিলেন শাম কৌশল। তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন এবং বলিউড এবং হলিউডের চলচ্চিত্রে অবদান রেখেছেন। অ্যাকশন পরিচালক হিসাবে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ইন্দ্রজালাম (১৯৯০), একটি মালয়ালম চলচ্চিত্র।
বলিউডে শ্যাম ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’ (২০১২), ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ (২০১৩), ‘পিকে’ (২০১৪), ‘পদ্মাবত’ (২০১৮), ‘সঞ্জু’ (২০১৮), ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ (২০১৭), এবং ‘সিম্বা’ (২০১৮) এর মতো ছবির অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র স্লামডগ মিলিয়নেয়ার (২০০৮)-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রকল্পেও কাজ করেছেন। জানিয়ে রাখি, প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তীর আসন্ন ছবি, দেবী চৌধুরানীর অ্যাকশন নির্দেশক হিসাবে কাজ করেছেন শ্যাম কৌশল। এই ছবি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন শ্রাবন্তীর চর্চিত প্রেমিক শুভ্রজিৎ মিত্র।