প্রধানত দক্ষিণী তারকা হলেও তাঁর জনপ্রিয়তায় ম্লান তাবড় তাবড় বলি-তারকা। স্বয়ং অমিতাভ, শাহরুখ,সলমনের কাছে ভারতের সবথেকে বড় সিনে-তারকা রজনীকান্ত! তাঁর সঙ্গে স্ক্রিন স্পেস করার জন্য মুখিয়ে থাকেন যে কোনও অভিনেতা। তবে ছবিতে নিজের বিপরীতে অনেক কম বয়সী নায়িকাদের 'কাস্ট' করানোর সুবাদে রজনীকান্তের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। তা সত্ত্বেও বক্স অফিসে ছবির সুপারহিট হওয়া থেকে আটকানো যায়নি। তবে হ্যাঁ, এই নির্দিষ্ট সমালোচনায় মুখ না খুললেও সেসব মোটেই বিস্মৃত হন না 'থালাইভা'।
২০১০ সালে বক্স অফিস কাঁপিয়ে মুক্তি পেয়েছিল 'রোবট'। শঙ্কর পরিচালিত সেই ছবিতে 'রজনী'-র বিপরীতে নায়িকা হিসেবে ছিলেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। তাঁদের মধ্যে বয়সের তফাৎটা ছিল ২৩ বছরেরও বেশি। এই ছবির প্রচারে এসে এই বিষয়ে দারুণ মজার গল্প শুনিয়েছিলেন 'থালাইভা'। যা শুনে মঞ্চে ঐশ্বর্যর পাশে বসা থাকাঅমিতাভ বচ্চন হাসতে হাসতে প্রায় আসন থেকে উল্টে পড়ে যান আর কী! তা কী এমন হয়েছিল যা শুনে 'বিগ বি'-র এই দশা হয়েছিল। আসুন তা শোনা যাক স্বয়ং রজনীকান্তের মুখেই।
মঞ্চ থেকেই 'রোবট'-এর তারকা বলা শুরু করেন যে তখন এই ছবির শ্যুটিং শুরু হয়নি। হাতে আরও ক'টা দিন রয়েছেন। এরকমই একদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁরই এক রাজস্থানি বন্ধু। নাম নন্দদুলাল।বন্ধুর সঙ্গে ছিল তাঁর পরিবারও। রজনীর মাথা ভরা টাক দেখে তাঁকে নন্দের জিজ্ঞাসা ছিল চুলটুলগুলো গেল কোথায়? মুখ শুকিয়ে রজনীর জবাব,' ওই আর কী,সব ঝরে গেছে।' রজনীর বলার ভঙ্গিমায় ততক্ষণে মঞ্চে উপস্থিত অতিথি থেকে হলঘরে বসা সাংবাদিকের দলের মধ্যে উঠেছে হাসির রোল। এরপর একথা সেকথার পর রজনী তাঁর বন্ধুকে জানান যে 'রোবট' নামের তিনি একটি ছবি করছেন, সেই ছবির নায়িকা হিসেবে রয়েছেন ঐশ্বর্য। তা শুনে তো বিগলিত হয়ে যান নন্দদুলাল। উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করে বসেন,' তা ভালো কথা,ওই ছবির নায়ক কে? মানে ঐশ্বর্যর বিপরীতে কে রয়েছেন?' অপ্রস্তুত রজনীকান্ত কোনওরকমে আমতা আমতা করে জবাব দেন, 'মানে ইয়ে..আমিই!'
এহেন জবাব শোনার পর নাকি পাক্কা দশ মিনিট আর কোনও কথা বলতে পারেননি নন্দদুলাল। এতটাই অবাক হয়ে গেছিলেন তিনি। ষাটোর্ধ্ব রজনীর সঙ্গে তিরিশের কোঠায় বয়সী একজন নায়িকা কিভাবে জুটি বাঁধতে পারেন তা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি। তার ওপরে ঐশ্বর্যের মতো ওরকম ডাকসাইটে সুন্দরী নায়িকা। দক্ষিণী তারকার কথায়, ' আমার সামনে আর কিছু না বললেও ঘরের বাইরে থেকে ওঁর গলা শুনতে পেয়েছিলাম। পরিবারকে নন্দ বলছিল ঐশ্বর্যর কি মাথাটা পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেল যে রজনীর নায়িকা হচ্ছে? আচ্ছা তাও না হয়ে মানা গেল। কিন্তু অভিষেক,অমিতাভ ওঁরাও কি পাগল টাগল হয়ে গেলেন যে এই কান্ড বসে বসে দেখছে!'
যে মজাদার ভঙ্গিমায় রজনীকান্ত এই গোটা ঘটনাটি পেশ করেছিলেন তা শুনে মঞ্চে টেবিল চাপড়িয়ে হাসতে হাসতে প্রায় দমবন্ধ হয়ে এসেছিল অমিতাভের। পাশে বসা ঐশ্বর্য এবং এ আর রহমানের অবস্থায় ছিল অবিকল সেরকমই। আর মঞ্চের নীচে উপবিষ্ট সাংবাদিকদের দল? মুহুর্মুহু তাঁদের হাততালি ও হাসির আওয়াজেই টের পাওয়া যাচ্ছিল 'রজনী'-র মুখে এই ঘটনা শুনে তাঁদের অবস্থা ঠিক কী!