বাংলার সঙ্গে তাঁর নাড়ির টান নেই বটে, কিন্তু হয়ত পূর্বজন্মের বন্ধন রয়েছে! তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের কন্যা, ছোট থেকে তামিল ও মালায়ালি শুনেই বড় হয়েছে। বলিউড তাঁর কর্মভূমি ঠিকই কিন্তু বাংলার সঙ্গেও ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে বিদ্যা। গৌতম হালদারের বাংলা ছবি ভালো থেকো'র সঙ্গে বড় পর্দায় জার্নি শুরু তাঁর। কাকতালীয়ভাবে বলিউডেও বিদ্যার প্রথম কাজ ‘পরিণীতা’।
বাঙালি কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাসের নায়িকা চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন এই সুন্দরী। তাই বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে তাঁর বন্ধন বেশ গাঢ়। আজও হিন্দি ছবির প্রচারে কলকাতায় এলে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঝরঝরিয়ে বাংলাতে কথা বলেন।
বিদ্যার সাম্প্রতিক রিলিজ ভুলভুলাইয়া ৩। সেখানেও মঞ্জুলিকা চরিত্রটি কিন্তু বাঙালি! সেই ছবির সেটে বসেই সুকুমার রায়-এর কালজয়ী কবিতা আবৃত্তি করেন বিদ্যা, সঙ্গী সহ-অভিনেতা রাজেশ শর্মা। ৭ বছর আগে অন্য এক ছবির সেটে রাজেশের কাছ থেকেই ‘সৎ পাত্র’ কবিতাটি শিখেছিলেন তিনি, সেই স্মৃতি ঝলিয়ে নিতেই ভুলভুলাইয়া ৩-র সেটে চলল কবিতা পাঠ।
সৎ পাত্র আবৃত্তিটি শুরু করেন রাজেশ শর্মা- ‘শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে….’। চটপট বিদ্যা বলে ওঠেন- ‘তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে’। এরপর জমল কবিতার আসর। মাঝেমধ্যে বিদ্যা অল্প-স্বল্প আটকে গেলে ধরিয়ে দিলেন রাজেশ শর্মা। ভিডিয়ো পোস্ট করে বিদ্যা লেখেন, ‘ভুল ভুলাইয়া ৩-এর শুটিংয়ের ফাঁকে প্রথম ‘আবোল তাবোল’ থেকে বলা কবিতা বললাম। সেটা আমার প্রিয় সহ-অভিনেতা, বন্ধু রাজেশ শর্মার থেকে ৭ বছর আগে শিখেছিলাম।’
বিদ্যা-রাজেশের এই ভিডিয়োতে উপচে পড়ছে লাইক-কমেন্ট। টলিপাড়া থেকে ভালোবাসা জানিয়েছেন মিমি চক্রবর্তী, শ্রুতি দাস, সায়ক চক্রবর্তীরা। বাঙালি অনুরাগীদের অনেকে লিখেছেন, ‘বিদ্যা তো অর্ধেক বাঙালি’। কেউ জানান, ‘বিদ্যা মনেপ্রাণে বাঙালি’। আজ যখন অনেক বাঙালি বাংলা ভুলতে বসেছে, সেখানে সত্যি বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে বিদ্যার এই প্রয়াস কুর্নিশযোগ্য। অন্যদিকে যে রাজেশ শর্মার কাছে তিনি এই কবিতা শিখেছেন, তিনিও কিন্তু বাঙালি নন।
বিদ্যার কেরিয়ারের ‘কাহানি’র তার জুড়ে কলকাতার সঙ্গে। গত মাসে ভুলভুলাইয়া ৩-র প্রচারে শহরে এসে আরজি কর কাণ্ড নিয়েও সরব হন তিনি। আর জি করের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে তাঁকেও। বিদ্যা জানিয়েছিলেন, ‘দুঃখ পেয়েছিলাম। আমার কেরিয়ারের শুরু থেকে এই শহর জড়িয়ে রয়েছে। কলকাতা প্রতিবাদের শহর। মায়ের শহরে এই রকম একটা ঘটনা কী ভাবে হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না।’