কুমার গৌরবের সঙ্গে প্রেম সম্পর্কে জড়িয়ে চর্চায় উঠেছিলেন বিজয়েতা পণ্ডিত। বাঙালি দর্শক অবশ্য তাঁকে মনে রেখেছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ‘অমর সঙ্গী’ হিসাবে। জীবনে অনেক ঝড়-ঝাপটা সামলাতে হয়েছে বিজয়েতাকে। যার অন্যতম স্বামী ও ছোট বোনের মৃত্যু। ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বিজয়েতার স্বামী, সঙ্গীত পরিচালক আদেশ শ্রীবাস্তব। তবে বোনের মৃত্যু ছিল বিজয়েতার কাছে বড় ধাক্কা।
বিজয়েতারা পাঁচ ভাইবোন ছিলেন। সুরকার জুটি যতীন-ললিত, অভিনেত্রী সুলক্ষণা, বিজয়েতা এবং সন্ধ্যা। ভাই-বোনেদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সন্ধ্যা পণ্ডিত ২০১২ সালে নিখোঁজ হয়ে যান। প্রায় এক মাস পরে তার কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছিল। জানা যায়, নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ব্যাঙ্কে যাচ্ছিলেন সন্ধ্যা। আর খোঁজ মেলেনি।
পরে থানের একটি আদালত সন্ধ্যার ছেলে রঘুবীরকে খুনের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়। লেহরেন রেট্রোর সাথে এক সাক্ষাত্কারে, বিজয়তা তার বোনের হত্যার বিষয়ে মুখ খুলেছেন এবং কেন এত বছর পরেও পরিবার এখনও সন্ধ্যার মৃত্যুর কথা সুলক্ষণাকে জানায়নি।
বোনের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন বিজয়তা পণ্ডিত
অভিনেত্রী জানান, 'ওকে (সন্ধ্যা) খুন করা হয়েছিল। আমরা কখনও ভাবিনি যে হঠাৎ করে এমন কিছু ঘটতে পারে। দাম্পত্য জীবনে বেশ সুখেই ছিলেন তিনি... কী হয়েছে জানি না। আমরা তাকে খুঁজে পাইনি, পরে কঙ্কাল পাওয়া যায়। প্রথমে বোনের পরিবার বলেছিল যে সে নিখোঁজ, তাই আমরা মানে আমি, আমার ভাই ললিত ও যতীন সব জায়গায় তাকে খুঁজতে যেতাম। দীর্ঘদিন পর ওর হাড়গোড় বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবস্থায় মেলে।
আর আপনি বিশ্বাস করবেন না, সুলক্ষণা দিদি আজও জানেন না যে আমাদের বোন আর নেই। এটা বিশ্বাস করতে পারেন? এই প্রথম আমি এটা বলছি। আমি তাকে কখনও বলিনি কারণ যদি সে জানতে পারে তবে সে সেই মুহুর্তে মারা যাবে। আমি তাকে বলতে থাকি যে আমাদের বোন ভাল আছে, সে ইন্দোরে থাকে এবং সে আমাকেও ফোন করে। সুলক্ষণা মনে করে সে বেঁচে আছে, সে আমাকে তার বোনকে তার ভালবাসা পাঠাতে বলে কারণ সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলছি, এর পেও আমাকে এই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
সুলক্ষণার সঙ্গে সঞ্জীব কুমারের গভীর সম্পর্ক ছিল। সঞ্জীব আচমকা হৃদরোগে মারা যাওয়ার পর সুলক্ষণা মানসিক অবসাদের শিকার হন। আজও সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। দিদিকে দেখভালের জিম্মা রয়েছে বিজয়েতার উপর।
সন্ধ্যার হত্যা মামলা
২০২১ সালে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১২ সালে সন্ধ্যা সিংয়ের ছেলেকে মায়ের হত্যার অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। সেই আদেশে থানের একটি দায়রা আদালত বলেছে যে অভিযুক্ত মদ্যপানে আসক্ত ছিল এবং মায়ের সাথে শত্রুতা ছিল তা ছাড়া প্রসিকিউশন খুনের স্বপক্ষে কোনও তথ্য-প্রমাণই প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
খুন, ডাকাতি, প্রমাণ লোপাট-সহ যাবতীয় অভিযোগ থেকে রঘুবীর সিংকে বেকসুর খালাস করল আদালত। আদালত আরও জানিয়েছে, রঘুবীরের বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের মামলাটি সন্দেহের ভিত্তিতে করা হয়েছিল, প্রমাণের ভিত্তিতে নয়। কে খুন করেছিল সন্ধ্যাকে? সেই উত্তর আজও অধরা।