সোমবার বিকালে মুম্বইয়ে ভিলে পার্লে শ্মশানে সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষকৃত্যে হাতেগোনা যে কয়েকজন বলিউড ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন তাঁর মধ্যে অন্যতম বিবেক ওবেরয়। এদিন রাতে সুশান্ত সিং রাজপুতকে একটি আবেগঘন বার্তা পোস্ট করেন অভিনেতা,ভাগ করে নেন এই ৩৪ বছরের প্রতিভাবান অভিনেতার এইভাবে আচমকা বিদায়ের কঠিন সত্যটা কীভাবে ছারখার করে দিয়েছে সুশান্ত সিং রাজপুতের পরিবারকে। তিনি লেখেন, এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি শুধু নামেই একটা পরিবার হয়ে রয়ে গেছে,সত্যিকারের পরিবার হয়ে উঠবার সময় এসেছে।
বিবেক লেখেন,'সুশান্তের শেষকৃত্যে হাজির থাকাটা সত্যি খুব বেদনাদায়ক…যদি আমি আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করতে পারতাম ওর সঙ্গে,ওকে সাহায্যে করতে পারতাম এই যন্ত্রাণাটা একটু কম করতে। এই যন্ত্রণার পথে আমার নিজের একটা দীর্ঘ যাত্রা রয়েছে। এটা খুব অন্ধকারের ভরপুর এবং একাকীত্বে ভরা। কিন্তু মৃত্যু এর জবাব কোনদিনই নয়,আত্মহত্যা কোনও জিনিসের সমাধান হতে পারে না। যদি একবার অন্তত ও নিজের পরিবারের কথা ভেবে থামত কিংবা ওর বন্ধুদের কথা…ওর লক্ষ,লক্ষ অনুরাগীর কথা..যারা আজ সবর্স্ব হারাল..যদি ও একবার বুঝত মানুষ ওর জন্য কতটা পরোয়া করে! আজ যখন আমি ওর বাবাকে দেখলাম ওঁর মুখাগ্নি করতে ওঁনার চোখে যে বেদনাটা ছিল সেটা অসহ্য,যখন দেখলাম ওঁর দিদি অঝোরে কাঁদছে আর বলছে তুই ফিরে আয়, আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না আমি সেটা দেখে কতটা ভেঙে পড়েছিলাম'।
বিবেক এরপর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেন,বলেন-' আমি আশা করছি এই ইন্ডাস্ট্রি যারা নিজেকে একটা পরিবার বলে,তাঁরা অন্তর্দর্শন করবে,আমাদের পাল্টেতে হবে ভালোর জন্য, আমাদের এক অপরের পিছনে কথা বলা বন্ধ করতে হবে,একে অপরের সত্যিকারের পরোয়া করতে হবে।…ইগো ভুলে সত্যিকারের প্রতিভার দাম দিতে হবে,এই পরিবারটাকে সত্যিকারের একটা পরিবার হয়ে উঠতে হবে..যেখানে প্রতিভার যত্ন নেওয়া হবে তাঁকে পিষে মেরে ফেলা হবে না,এমন একটা জায়গা হতে হবে যেখানে একজন শিল্পী নিজেকে প্রশংসিত হয়,তাঁকে নিজের সুবিধামতো কেউ ব্যবহার না করতে পারে। এই ঘটনা আমাদের সবার জন্য একটা জেগে উঠবার ডাক'।
সব শেষে বিবেক লেখেন,'আমি খুব মিস করব সুশান্ত সিং রাজপুতের ওই হাসি মুখটা, আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি উনি যেন তোমার সব যন্ত্রণাগুলো আপন করে নেন,তোমার পরিবারকে এই বিরাট ক্ষতির সঙ্গে লড়াই করবার শক্তি দিন সর্বশক্তিমান।আশা করি তুমি ভালো কোনও জায়গায় রয়েছে..হয়ত সত্যি আমরা তোমার যোগ্য হয়ে উঠতে পারিনি'।
ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ হারিয়ে একটা সময় ডিপ্রেশনের সঙ্গে লড়াই করেছেন বিবেক ওয়েবরও। তবে তিনি লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছে। এই অভিজ্ঞতাটা সুশান্তের সঙ্গে ভাগ করে নিতে না পারার যন্ত্রনাই এদিন ঘুরে ফিরে এল বিবেকের এই পোস্টে।