বলিউডের প্রথম ড্যান্সিং ডিভা বৈজয়ন্তীমালা। শনিবার ৮৬ বছরে পা রেখেছেন তিনি। নৃত্যশিল্পী এবং অভিনেত্রী বৈজয়ন্তীমালা রাজ কাপুরের আইকনিক ভালোবাসার ছবি ‘সঙ্গম’-সহ অনেক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন।
‘সঙ্গম’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য একবার সুইমস্যুট পরেছিলেন বৈজয়ন্তীমালা। প্রথমবার অনস্ক্রিনে সুইমস্যুট পরেছিলেন তিনি। আর এই সুইমস্যুট পরানোর জন্য রাজ কাপুরকে অনুরোধ করতে হয়েছিল বৈজয়ন্তীমালার ঠাকুরমার কাছে, যেন তিনি অভিনেত্রীকে এই পোশাক পরতে রাজি করান। সেই কারণে বৈজয়ন্তীমালার ঠাকুরমার পায়ের কাছে বসে থাকতে হয়েছিল অভিনেতাকে।
আরও পড়ুন: বলিউডে ‘বয়কট’ ট্রেন্ডে শুধুই টার্গেট খানেরা? এই ১০ বিগ বাজেটের ছবি নিয়েও সংশয়
প্রথমবার দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে অভিনয় করার সময় সুইমস্যুট পরেছিলেন বৈজয়ন্তীমালা। এরপর হিন্দি ছবিতে সুইমস্যুট পরে দেখা মিলেছিল তাঁর। অভিনেত্রী তাঁর লেখা ‘বন্ডিং’ বইতে এই বিষয় বিস্তারিত লিখেছিলেন। ২০০৭ সালে প্রকাশ পেয়েছিল সেই ছবি।
'রাজ কাপুর সম্পর্কে আমার প্রথম ধারণা ছিল তিনি বেশ মজার মানুষ ছিলেন। আমার ঠাকুমার সঙ্গে বেশ মিষ্টিভাবে মিশতেন। তিনি তাঁর পায়ের কাছে বসতেন, তাঁর হাত ধরতেন, অনুনয় করে তাঁর দিকে তাকাতেন এবং অনুরোধ করতেন, 'আম্মাজি, আম্মাজি' বলে। তেমন ভাবেই বাস্তব জীবনে তিনি দুর্দান্ত অভিনেতা ছিলেন। আমার ঈশ্বর, তিনি নিজের ছবির জন্য সবকিছু করতেন। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোনও দৃশ্য করার সিদ্ধান্ত নিলে, তিনি জানতেন কীভাবে তা করতে হবে। আম্মাজিকে বলেছিলেন, জলে থাকলে ভালো হবে। পুরোটাই হবে লম্বা শটে আর বাকিটা হবে ডুপ্লিকেটের মাধ্যমে। পুলে ঝাঁপ দেওয়ার আগে আমি পুরোটা ঢেকে ছিলাম। কিন্তু সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জলের মধ্যে থাকা কষ্টকর ছিল। ঠাকুমা আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, 'আমরা সবাই আছি এবং কোনও কিছুই হাতের বাইরে যাবে না'।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যের এই হলগুলিতে বিনামূল্যে সিনেমা দেখা যাবে! রইল তালিকা
তিনি আরও স্মরণ করেছেন, কীভাবে তিনি প্রথমে ছবিটি করতে রাজি হয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, এ জন্য তাঁকে (রাজ কাপুর) অভিনেত্রীর ঠাকুরমার কাছে অনুমতি নিতে হয়েছিল। ‘অভিনেতার বিষয় আর কী বলব। ঠাকুরমা মহান আরকে সম্পর্কে সমস্ত রঙিন গল্প শুনেছিলেন। প্রথমদিকে, ইয়াগাম্মা আমাকে এই অ্যাসাইনমেন্ট করতে বারণ করেছিলেন। কারণ পুরুষ হিসাবে মহিলাদের মধ্যে তাঁর অনেক খ্যাতি ছিল। কিন্তু তিনি এটাও জানতেন একজন পরিচালক হিসেবে আরকে ছিলেন অসীম দক্ষ ব্যক্তিত্ব। ছবির ব্যাপকতা, প্রচার বা হাইপ যাই হোক না কেন, তিনি কোনও কিছুতেই থামতেন না। অন্যদের তুলনায় তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা ছিল। শেষে দিকে ঠাকুমাকেও মানিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।’
বিখ্যাত গানের শ্যুটিংয়ের গল্প ফাঁস করে বৈজয়ন্তীমালা যোগ করেছেন, ‘তিনি ঠাকুমাকে বুঝিয়েছিলেন, কেমন ভাবে তিনি আগে এই সিনেমাটি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা করতে পারেননি এবং রাজেন্দ্র কুমারকেও কাস্ট করা হবে। এরপরই ঠাকুমা রাজি হয়ে যান। আরকে আমাকে বম্বে থেকে একটি টেলিগ্রাম পাঠিয়েছিলেন যাতে লেখা ছিল, ‘বোল রাধা বোল সঙ্গং হোগা কে নেহি..’। আমি ঠাকুমার কাছে রাখতেই তিনি বললেন, আমি এগিয়ে যেতে পারি। তাই আমি উত্তর পাঠালাম, ‘সঙ্গম হোগা, হোগা, জারুর হোগা...’ এবং এটি জলে একটি গানের সিকোয়েন্সে পরিণত হয়েছিল।'
বৈজয়ন্তীমালা অনস্ক্রিনে সঙ্গম ছাড়াও নয়া দৌর, নিউ দিল্লি, নয়া দৌড়, আশা, সাধনা, মধুমতী এবং গঙ্গা-যমুনার মতো অনেক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি অনেক তামিল এবং তেলুগু ছবিতেও কাজ করেছেন।