সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন তিনি মুসলিম হতে রাজি দু'টি কারণে। এক কাবাব, দুই ওয়াহিদা রহমান। অমিতাভ বচ্চনের কাছে স্বপ্নসুন্দরী এবং প্রিয় নায়িকার নামের জায়গায় প্রথম দিন থেকে শুরু করে আজও রয়েছে ওয়াহিদার নাম। 'প্যায়াসা', 'গাইড', 'কাগজ কে ফুল', প্রভৃতি ছবিতে দক্ষ অভিনয়ের পাশাপাশি ওয়াহিদা রহমানের নিটোল সৌন্দর্যে বুঁদ হয়েছিল আসমুদ্রহিমাচল ভারত। তবে জানেন কি সেই যুবতী বয়সেই চুল সাদা হতে শুরু করেছিল তাঁর?
যুবতী বয়সেই 'বৃদ্ধ' হতে শুরু করেছিলেন ওয়াহিদা রহমান। চুলে পড়েছিল রুপোলি রঙের প্রলেপ। ১০ দিন অন্তর তাই চুল রঙ করতেন তিনি। ফলে বাইরের মানুষের কাছে সত্যিটা চাপাই থাকত। তবে একবার তাঁর স্বামী যখন অসুস্থ, ডাক্তার, হাসপাতাল ইত্যাদি নিয়ে দারুণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই ছোটাছুটির মধ্যে চুল রঙ করার কথা বেমালুম ভুলে গেছিলেন তিনি। তাই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরোতে আর দেরি হয়নি।
ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জানিয়েছেন , ' মাঝেমধ্যে বড্ড ক্লান্ত লাগত নিয়ম করে ১০ দিন অন্তর চুল রঙ করতে হতো বলে। অথচ অন্য উপায়ও ছিল না। তবে স্বামীর অসুস্থতার সময় সেসব কি আর মাথায় থাকে? আমিও বেমালুম এইসব করার কথা ভুলে গেছিলাম। এরপর যখন পরিস্থিতি সামলে ফের মুম্বই ফিরলাম, সবাই আমার ওই রূপ দেখে আঁতকে উঠলেন। আমার ইন্ডাস্ট্রির ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা যেমন হেলেন, সাধনা, নন্দা তো রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। আমাকে দেখে ওঁরা মুখ ফস্কে আক্ষেপ করে বলেই ফেলেছিলেন, 'হে ঈশ্বর! এ কী করলে তুমি'।
তবে তিনি যে নিজের সৌন্দর্যের সংজ্ঞা নিয়ে কোনওদিনই তেমন একটা মাথা ঘামাননি সেকথা আরও একবার পরিষ্কার করে দিলেন সত্যজিতের 'অভিযান' ছবির নায়িকা। তাঁর কথায়, 'একবার যদি সত্যিটা মেনে নেওয়া যায় তাহলে অনেকটাই চাপ কমে যায়। তাছাড়া আমি কোনওদিনই তেমন একটা মারকাটারি সুন্দর ছিলাম না। আলাদা করে কোনওদিনই তেমন কিছু করেনি। পর্দায় আমাকে যা দেখতে লাগতো, তাঁর পুরোটাই কৃতিত্ব ক্যামেরাম্যানের'।