দক্ষিণবঙ্গে আছড়ে পড়া অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপানের প্রভাবে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত সিঙ্গল স্ক্রিন প্রেক্ষাগৃহ গুলিকে এককালীন দু লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । এছাড়াও আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলগুলিকেও এককালীন এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাবে নিদারুণ ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পরে স্বভাবতই এই ঘোষণায় কিছুটা স্বস্তির মুখ দেখলেন হল মালিকেরা ।
গত অগস্টেই প্রযোজক এবং পরিবেশনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের পূর্ব ভারতের সংগঠনের এপেক্স বডির তরফ থেকে ,সাইক্লোন পরবর্তী পর্বে সিনেমা হল গুলির দুর্দশার কথা জানিয়ে রাজ্যের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল । শুক্রবার রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের তরফে পূর্ব ভারতীয় মোশন পিকচার এসোসিয়েশন ( ই আই এমপিএ ) -কে পাঠানো একটি চিঠিতে জারি করা নির্দেশিকায় এই এককালীন আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে ।
গত মে মাসের ২০ তারিখ প্রবল বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির হাত ধরে আছড়ে পরে সাইক্লোন আমপান । উপকূলবর্তী জেলা গুলিতে তো বটেই , এমনকি খোদ শহর কলকাতাতেও গাছ উপরে , ইলেক্ট্রিকের খুঁটি ভেঙে , শহর ব্যাপী দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে তান্ডবের সাথে সাথে প্রবল ধ্বংসের খেলায় উমত্ত হয়ে ওঠে প্রকৃতি । সমুদ্র তীরবর্তী একাধিক অঞ্চলে বন্যাপরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ।
পরবর্তীকালে করোনা আবহেই জুলাই মাসে টলি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একাধিক স্বত্বধারক , প্রযোজনা সংস্থার প্রতিনিধি, অভিনেতা অভিনেত্রীদের সাথে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী । রাজ্য সরকারের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় অতিমারী পর্বে সিনেমা হল খোলা সম্ভব না হলেও ফোরামের আবেদনের কথা মাথায় রেখে ক্ষতিগ্রস্ত সিনেমা হলগুলিকে আর্থিক সাহায্য করা হবে । সেই প্রতিশ্রুতিই আজ পূরণ করা হলো সরকারের তরফে ।
অতিমারী পর্বে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই বন্ধ সিনেমা হল । কেন্দ্রের তরফ থেকে আনলক ৪ এর গাইডলাইন চলে এলেও প্রেক্ষাগৃহ খোলার ব্যাপারে কোনো অনুমতির নির্দেশিকা এখনো জারি করা হয়নি । এহেন আবহে শুন্য রোজগার এবং উপর্যুপরি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জোড়া ফলায় দেওয়ালে পিঠ থেকে গিয়ে ধ্বংসের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল মালিকেরা যে রাজ্য সরকারের এই সহায়তায় কিছুটা লড়াইয়ের রসদ পাবেন , তা নিঃসন্দেহে বলাই যায় ।