‘জয়া অমিতাভ বচ্চন’, গত জুলাই মাসে রাজ্যসভায় এভাবেই সম্বোধন করেছিলেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখর। আর তাতেই বেজায় বিরক্ত হয়েছিলেন সাংসদ জয়া। সাফ জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর স্বামী এবং তাঁর কৃতিত্বে গর্বিত, তবে মহিলাদের নিজস্ব পরিচয়ের সঙ্গে স্বামীর নাম জুড়লে তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। তবে জগদীপ ধনখর তখন পাল্টা জয়াকে বলেন, তিনি চাইলেই নিজের নাম পরিবর্তন করে নিতে পারেন, সে আইন তো আছেই, তবে তিনি সেটাই বলছেন, যেটা নথিভুক্ত রয়েছে।
এই নিয়েই সেদিন রাজ্যসভায় নতুন বিতর্ক তৈরি হয়। প্রসঙ্গত এর আগেও একবার অভিনয় দুনিয়ায় পদবী বিতর্কে স্ত্রী জয়ার পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন বিগ বি অমিতাভ বচ্চন। এবিষয়টি নিয়ে জয়ার বাবা খ্যাতনামা সাংবাদিক তারুণকুমার ভাদুড়ী ১৯৮৯ সালে দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অফ ইন্ডিয়াতে বিস্তারিত লিখেছিলেন।
ঠিক কী ঘটেছিল?
অমিতাভ ও জয়ার বিয়ে হয় ‘জঞ্জির’ ছবিটি ব্লকবাস্টার হিট হওয়ার পর। তবে ১৯৭৩ সালে বিয়ের আগে তাঁরা একে অপরকে বেশকিছুদিন ডেট করেছিলেন। জয়ার বাবা তারুণ কুমার ভাদুড়ী লেখেন, জামাই অমিতাভ বচ্চন কীভাবে ছবির পোস্টারে পূর্ব পদবী ব্যবহার নিয়ে স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেসময় ছবির পোস্টারে অনেকেই জয়াকে ভাদুড়ীর পরিবর্তে বচ্চন ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
তিনি লেখেন, 'একটা ঘটনা মনে পড়ছে। বিয়ের পরে, জয়া একটা ছবি করছিলেন এবং যখন পোস্টার প্রকাশিত হয়েছিল, তখন কেউ বা কারা খুব সম্ভবত অমিতাভকে তোষামোদ করার জন্য তাঁকে বচ্চন পদবী ব্যবহারের কথা বলেন। প্রশ্ন তোলেন, ‘এটা কেন হবে? ওঁর বচ্চন হিসেবেই লেখা।’ জবাবে অমিত বলেন, ‘অবশ্যই তিনি একজন বচ্চন, কিন্তু আপনারও জানা উচিত যে ইন্ডাস্ট্রিতে এবং পেশাগতভাবে তিনি জয়া ভাদুড়ি নামেই বেশি বিখ্যাত।’
তারুণ ভাদুড়ী আরও লেখেন, তাঁর মেয়ের বিয়ের বিরোধিতা করেছিলেন একজন বাঙালি পুরোহিত। যাঁকে কিনা অনেক খুঁজে ভাড়া করে আনা হয়েছিল। পুরোহিত বলেছিলেন, জয়া ভাদুড়ী বাঙালি ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে। তবে অমিতাভ বচ্চন বাঙালিও নয়, ব্রাহ্মণও নন, তাই এই বিয়ে হতে পারে না। এরপর অনেক ঝামেলার পর বিষয়টির সমাধন হয়। আর অমিতাভ বচ্চন কোনও কিছুতে বাধা না দিয়ে বিয়ের দিন থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান পালন করেছিলেন।
তারুণ ভাদুড়ী লিখেছিলেন, অমিতাভকে তাঁর খ্যাতি এবং পর্দার বাইরে নিজের 'অন্তর্মুখী' স্বভাবের কারণে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহুবার ভুল বোঝাবুঝি এবং বদনামের স্বীকার হয়েছেন।এমনকি বেশকিছু সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছিল যে অমিতাভ তাঁর বিয়ে নিয়ে অখুশি ছিলেন, যদিও সেটা ছিল না। কারণ অমিতাভকে সত্যিই একজন ভালোবাসার পাত্র ছিলেন।