'ফ্যাসিস্ট হাসিনার সমর্থক' বলে আক্রমণ, আদালতে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন নুসরত, আর কী ঘটেছিল?

১৮ মে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল পর্দার ‘শেখ হাসিনা’ নুুসরতকে। খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে। এরপর ১৯ মে সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত নুসরতের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেলে পাঠিয়েছিলেন। যদিও আজ মঙ্গলবার (২০মে) সকালেই জানা যায় শেষপর্যন্ত জামিন পেয়ে গিয়েছেন নুসরত।

তবে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে নুসরতকে আদালতের তোলার সময়কালীন বেশকিছু ছবি উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, সোমবার যখন ফারিয়াকে কাঠগড়ায় তোলা হয় তখন তাঁকে পরানো হয়েছিল বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট। আদালতের কাঠগড়ায় তোলার পর একজন পুলিশ সদস্য তাঁর মাথায় পরানো হেলমেটটি খুলে ফেলেন। এরপর ঠিক কী ঘটেছিল আদালতে?

ঠিক কী ঘটেছিল আদালতে?

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, নুসরত প্রায় ৩০ মিনিট কাঠগড়ায় ছিলেন। সেসময় ফারিয়া দেওয়ালের দিকে মুখ করে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে একজন আইনজীবী নুসরতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন অভিনেত্রী সেই আইনজীবীর সঙ্গে ইশারায় কথা বলেন।

আদালতে নুসরত ফারিয়াকে ভীষণই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। কাঠগড়ার রেলিং ধরে তিনি প্রায় ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। তবে অভিনেত্রী কোনও বক্তব্য রাখেননি বলেই খবর।

জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন গত ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এক ব্যক্তি। এরপর তিনি ৩ মে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা করেন। সেই মামলাতেই গ্রেফতার করা হয় নুসরতকে।

আদালতে বাংলাদেশ সরকার পক্ষের আইনজীবী নুসরত ফারিয়াকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে আটক রাখার আবেদন করেন। সেসময় তার বিরোধিতা করেছিলেন অভিনেত্রীর আইনজীবী। জানান,তাঁর মক্কেল একজন সুপরিচিত অভিনেত্রী। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নুসরত সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনের পক্ষেও লেখালেখি করেছিলেন। জানানো হয়, যে মামলায় নুসরতকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই ঘটনার সময় নুসরত নিজের দেশে ছিলেন না, ছিলেন কানাডায়।

যদিও বাংলাদেশ সরকার পক্ষের আইনজীবী বিরোধিতা করে জানান, নুসরত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। বলেন, ‘নুসরাত ফারিয়া শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বায়োপিকে অভিনয় করেছিলেন। রুপালি পর্দায় তিনি শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। অভিনয় করা কোনো দোষের কিছু নয়। কিন্তু তিনি পরবর্তী সময়ে বলেছিলেন, প্রতিটা ঘরে শেখ হাসিনা রয়েছে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে খুশি করতে চেয়েছিলেন’।

যদিও আদালতে এই তর্ক বিতর্ক চলাকালীন কোনও মন্তব্য করেননি নুসরত ফারিয়া। তিনি মাথা নিচু করে নিশ্চুপ হয়ে, মলিন মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তবে সরকার পক্ষের আইনজীবী যখন তাঁকে ফ্যাসিস্টের সমর্থক তকমা দেন তখন কাঁদতে ও চোখের জল মুছতে দেখা যায় নুসরত ফারিয়াকে। পরে শুনানি শেষে অভিনেত্রীকে জেলে ঢোকানো হয়। এরপরই নুসরতের গ্রেফতারি নিয়ে সরব হন সেদেশের বহু ব্যক্তিত্ব শিল্পী। এরপরই মঙ্গলবার সকালে জামিন পান নুসরত।