থিয়েটার, টেলিভিশন থেকে সিনেমা- বাংলা বিনোদনের সব ক্ষেত্রে তাঁর বিচরণ। জোছন দস্তিদারের ‘তেরো পার্বণ’ ধারাবাহিকের হাত ধরে জার্নি শুরু খেয়ালী দস্তিদারের। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলা সিরিয়ালের অন্যতম স্তম্ভ ‘তেরো পার্বণ’। তবে ব্য়ক্তিগত জীবনে অনেক উঠা-পড়ার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি, তবে থেমে যাননি।
বিয়ে ভেঙেছিল খেয়ালীর। তারপর ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেই বিমাতৃসুলভ আচরণের শিকার হয়েছিলেন তিনি। একবার ছেলের সঙ্গে দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে এসে ভাঙা বিয়ের যন্ত্রণার কথা শুনিয়েছিলেন অভিনেত্রী। খেয়ালীর পথে হেঁটে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেই কাজ করছেন তাঁর ছেলে আদিত্য সেনগুপ্ত। ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবিতে লিড চরিত্রে কাজ করেছিলেন আদিত্য, তবে ক্যামেরার পিছনে কাজ করতেই অধিক স্বচ্ছন্দ তিনি।
জিৎ-কোয়েলের ‘শেষ থেকে শুরু’র চিত্রনাট্য (অ্যাডাপ্টেড) আদিত্যর লেখা। তবে ছেলেবেলায় মা-বাবার ভাঙা সম্পর্কে জেরবার হয়েছিলেন তিনি। রচনাকে খেয়ালী জানান, ‘আমার প্রথম বিয়ে দেবাংশুর সঙ্গে… যখন ওকে আমাদের বিচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, ও খুব চাপা। প্রথমদিকে ওতো কিছু বোঝাতো না তবে আমি বুঝতাম ও খুব স্ট্রাগলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমি চেষ্টা করতাম, যতটা সম্ভব ওকে বন্ধু হয়ে আগলে রাখতে’। ছেলেবেলায় প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে আদিত্যকে? অভিনেত্রী বলেন, ‘একদিন ও স্কুল থেকে এসে বলল, মা আমাকে সবাই বলেছে ‘তোর মায়ের দুটো বিয়ে, তোর মায়ের দুটো বর। এমনটা কেন বলছে? আমি বললাম, তুমি ওদের বলবে হ্যাঁ, আমার মায়ের দুটো বিয়ে। আমার মা ডিভোর্সী। আমি আমার সৎ বাবার সঙ্গে থাকি।’
দুজনে দুজনকে জড়িয়ে থাকার সময় খেয়ালী ছেলেকে বোঝাতেন, ‘যার কাঁধ শক্ত হয় তাঁর উপরই ভগবান বোঝা চাপিয়ে দেয়। তোমার কষ্ট পাওয়ার কোটা এখন সম্পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। পরে আর কষ্ট পাবে না’। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পরই বোঝা যায় সম্পর্কের আসল মানে বিশ্বাসী আদিত্য। তিনি বলেন, ‘একটা সময় মা টিভির জগতের সবচেয়ে বড় অভিনেত্রী ছিলেন। কিন্তু আমাকে বড় করার জন্য মায়ের কাজটা কমে গেল। সেই স্যাকরিফাইজটা অনেকেই বোঝে না। বলে, দ্বিতীয় বিয়ে হয়ে গেছে স্য়াকরিফাইজ কোথায়? কিন্তু আমি যে বড় হতে পেরেছে, এত ভালো পরিবারে বড় হতে পেরেছি সেটা সবটাই মা আর বাপির কৃতিত্ব।’
দেবাংশু সেনগুপ্তর সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পর অভিনেতা অরিন্দম গঙ্গোপাধ্য়ায়কে বিয়ে করেছিলেন খেয়ালী। ছেলে আদিত্যকে নিয়ে সুখী গৃহকোণ খেয়ালী-অরিন্দমের।