দাম্পত্য় জীবনের ৩৫ বছর পার করে ফেলেছেন নচিকেতা চক্রবর্তী। সুমিতার হাত ধরে জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের লম্বা সফর পার করেছেন নচিকেতা। তাঁদের একমাত্র কন্যা ধানসিঁড়ি। সুখী পরিবার গায়কের। কিন্তু যৌবনে প্রেম নিয়ে কম কনফিউসড ছিলেন না নচিকেতা। বা বলা ভালো তাঁর প্রেমিক সত্ত্বা মন বিভ্রান্ত করেছিল তাঁকে।
তাঁর কাছে 'প্রেম আসলে পিটুইটারির খেলা। আমরা বোকারা বলি প্রেম- ইটস এ গেম'। গানে গানেই এই কথা বলেছেন নচিকেতা। ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে এক টক শো-তে এসে প্রেম নিয়ে বিভ্রান্তির কথা জানিয়েছিলেন 'আগুন পাখি' নচিকেতা। তিনি বলেন, একটা বিশ্বাস নিয়ে বেশিদিন চলা যায় না, ব্যবহারিক জীবনে মানুষ প্রত্যেক দিন তাঁর বিশ্বাস থেকে সরে যায়। একটা বিশ্বাসকে আঁকড়ে চলার চেষ্টা নচিকেতার চোখে মূর্খামি মাত্র।
নিজের লেখা গানের কথা ধার করে তিনি বলে ওঠেন, ‘প্রেমে পড়তে লাগে না বয়স, মনে থাকে না উনিশ-বিশ….’। কৌতুহলী ঋতুপর্ণ পালটা জানতে চান, এই গান পড়ে যদি তাঁর স্ত্রী প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়, জানতে চায় কোন উনিশ বছরের তরুণীর প্রেমে পড়েছেন নচিকেতা? তাহলে কী জবাব দেবেন গায়ক? গানের সূত্র ধরে ঋতুপর্ণ আরও প্রশ্ন করলেন, ‘তোর স্ত্রী যদি জিজ্ঞেস করে, ‘আমি রয়েছি, আমার উপস্থিতি কী ভাবে অস্বীকার করো তোমার জীবনে?’
উনিশে এপ্রিল পরিচালকের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে হাসিমুখে নচিকেতা জানান, ‘যে ভাবে বাকি সকলে সামলায়।’ ঋতুপর্ণ সটান জানতে চান তাহলে কি নিরানব্বই ভাগ পুরুষের মতো মিথ্যের আশ্রয় নেবেন গায়ক? নচিকেতা জানান, ‘অধিকাংশ পুরুষ যা করে, বাড়ি থেকে বেরিয় চলে যাব’। কিন্তু জীবনে সবকিছু কি এড়িয়ে চলা সম্ভব? প্রেম আর কর্তব্যের সংঘাত নিয়ে আলোচনা আরও খানিক এগিয়ে চলে।
ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানির আড্ডায় ঋতুপর্ণ জানতে চান কেন পুরুষদের কাছে স্ত্রী সিকিউরিটি ডিপোজিটের মতো? ক্ষণিকের ভালোলাগা বদলে যেতে পারে বলেই কি সবসময় পরকীয়ার কথা খোলাখুলিভাবে পুরুষরা স্ত্রীকে বলতে পারে না? নাকি ডিভোর্স হয়ে গেলে সমাজ কি বলবে সেই ভাবনার জেরেই দম্পত্য সম্পর্কের বোঝা বয়ে বেড়ানো?

দার্শনিক ভঙ্গিতে জবাব আসে। নচিকেতা বলেন, ‘আমার মা তো দুর্গাঠাকুরের মতো দেখতে সুন্দর নন। কিন্তু আমি দুর্গাঠাকুরকেও মা বলি, আমার মাকেও মা ডাকি। যখন আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করে, আমার মাকে কেমন দেখতে? আমি বলি, আমার মাকে সুন্দর দেখতে।'