শাহরুখ যখন বলিউডে তাঁর পরিচয় পাননি তার আগেই গাঁটছড়া বেঁধে ছিলেন গৌরির সঙ্গে। এরপর কয়েক দশক কেটে গেছে। অনেক ওঠা-নামার পর বলিউডে এখন সফল অভিনেতা এবং ফ্যামিলি ম্যান হিসেবে পরিচিত কিং খান। তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে ভরা সংসার। কিন্তু দুজনের-শুরুর পথ চলাটা বেশ কঠিন ছিল।
রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারের মেয়ে গৌরি। অন্যদিকে ইসলাম ধর্মবলম্বী শাহরুখ। বিয়ের বিষয়ে স্বাভাবিকভাবে আপত্তি জানিয়েছিল গৌরির পরিবার। তবে শেষমেষ বিয়েতে মত দেয়। এমনিতেই শাহরুখের মাথায় হামেশা দুষ্টু বুদ্ধি ঘোরে। রিসেপশনের দিনও বাদ যাননি তিনি। গৌরীর পরিবারের সকলকে চমকে দিয়েছিলেন শাহরুখ। ফরিদা জালালকে দেওয়া এক বহু পুরোনো সাক্ষাত্কারে একথা জানিয়েছিলেন বাদশা।
বিয়ের রিসেপশনে অভিনেতা গৌরির পরিবারের অনেকেই চাপা গলায় বলছিলেন, এবার হয়ত ধর্মান্তর করা হবে বাড়ির মেয়ের। কথা কানে যাওয়া মাত্রই শাহরুখ গৌরির উদ্দেশে বলেন, ‘চলো ১টা বেজে গেছে আমরা নামাজ পড়তে যাই’। শাহরুখ সকলের সামনে জানান, এবার থেকে গৌরির নাম হবে আয়েশা, এখন থেকে কেবল বোরখা পরবেন তাঁর স্ত্রী। রোজ নমাজ পড়তে হবে। এসব শুনে তো গৌরির পরিবারের চক্ষু চরকগাছ। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসিতে ফেটে পড়েন শাহরুখ। তিনি বলেন, ‘আমি সব ধর্মকে সম্মান করি। এবার সেই ধর্মের সব আদব-কায়দাকেও সম্মান জানাই’।
এরপরই এসআরকে আরও বলেন, বিয়ে এবং রিসেপশন মিলিয়ে যা হয়েছিল, তা চিরকাল মনে থাকবে তাঁর। কিন্তু, কোনও ধর্মকে অসম্মান কখনও করেননি তিনি। ভবিষ্যতেও করবেন না, ২৪ বছর আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান শাহরুখ।
২০০৫ সালে করণ জোহারের চ্যাট শো-তে নিজের কথা জানিয়েছিলেন গৌরি খান। গৌরি বা শাহরুখ, দু'জনেই একে অপরের ধর্মকে সম্মান করেন বলেন জানিয়েছিলেন তিনি। কেউ কাউকে কোনও কিছুতে আজ পর্যন্ত জোর করেননি। এভাবেই প্রায় ত্রিশ বছর একসঙ্গে কাটিয়ে ফেলেছেন তাঁরা।
গত বছর ডান্স রিয়ালিটি শো ডান্স প্লাসের আসরে শাহরুখ বলেন, 'আমরা কখনই হিন্দু-মুসলমানের কথা আলোচনা করিন না। আমার স্ত্রী হিন্দু, আমি মুসলমান এবং আমার সন্তানরা হল হিন্দুস্তান। যখন ওঁরা স্কুলে গিয়েছিল, সেখানে ফর্মে ভর্তি করতে হয় যে তোমার ধর্ম কোনটা? আমার মেয়ে সেই সময় আমাকে এসে জিজ্ঞাসা করেছিল বাবা আমাদের ধর্ম কি? আমি ওখানে সুহানার ফর্মে লিখে এসেছিলাম আমাদের ধর্ম ভারতীয়। এর বাইরে আমাদের আর কোনও ধর্ম নেই'।