ভেবেচিন্তেই অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শ্রীদেবী। এবং তা নিয়ে হয়ত কোনও আক্ষেপও ছিল না তাঁর। একান্তে সেকথা জানিয়েওছিলেন তাঁর প্রিয় ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রাকেও। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথাই জানালেন স্বয়ং এই সেলেব ডিজাইনার।
সালটা ১৯৯৬। সেদিন 'জুদাই' ছবির শেষ দিনের শুট ছিল আমেরিকার লাস ভেগাসে। শুটিং শেষে একটি উঁচু ইমারতের টপ ফ্লোর থেকে নিচে নামার লিফ্ট ধরেছেন শ্রীদেবী। পাশে দাঁড়িয়ে মনীশ। সেই সময়েই কোনওরকম বাড়তি কথা না বলে ছোট্ট করে মনীশকে 'শ্রী' জানালেন তিনি এই ছবির পর আর কাজ করবেন না। বলিউড থেকে অবসর নিচ্ছেন। সেলেব ডিজাইনারের কথায়, 'শুনে কয়েক মুহূর্ত কী বলব ভেবে উঠতে পারছিলাম না। শুধু বুঝতে পারছিলাম গলার কাছে একটা কষ্ট দোলা পাকিয়ে উঠছে। পরে অনেক ভেবেছি যে পেশাগত জীবনে ইটা তো হতেই পারে যে একটা অসময়ের পর সবাই অবসর নেয়। তাহলে ওঁর এই সিদ্ধান্তের কথা শুইনা এত কষ্ট কেন হয়েছিল আমার? বুঝেছিলাম পেশাগত সীমানা ডিঙিয়ে কোথাও একটা আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিলাম ওঁর সঙ্গে আমার।'
এখানেই না থেমে মনীশ আরও বলেন যে বেশ কিছু প্রোজেক্টে শ্রীদেবীর সঙ্গে কাজ করার ফলে তাঁদের দু'জনের মধ্যে শ্রদ্ধা মেশানো একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। 'লাডলা', 'জুদাই', 'গুমরাহ' এর মতো অজস্র সুপারহিট ছবিতে শ্রীদেবীর পোশাক পরিকল্পনা এক হাতে সামলেছেন তিনি। কখনও পরনিন্দা, পরচর্চা না করা শ্রীদেবীর এই গুণ মনীশকে ভীষণভাবে আকর্ষণ করত। কাজের প্রতি তাঁর 'শ্রীদেবী ম্যাম'-এর মনোযোগ, নিয়মানুবর্তিতা সম্ভ্রম আদায় করে নিত সবার। এবং অবশ্যই তাঁরও। এই বিখ্যাত ডিজাইনার জানিয়েছেন শ্রীদেবীর দুই কন্যা জাহ্নবী এবং খুশি দেখতে হাসপাতালেও গেছিলেন তিনি। এমনকি 'ইংলিশ ভিংলিশ' ছবির মাধ্যমে দীর্ঘ ১৫ বছর পর বলিপাড়ায় কামব্যাক করার আগেও নিয়মিত ভাবে শ্রীদেবীর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল মনীশের। বিখ্যাত এই বলি-অভিনেত্রীর মৃত্যুর পরেও তাঁর দুই মেয়ের সঙ্গেও দারুণ সম্পর্ক মনীশের। তাঁর কথায়, 'জাহ্নবী ও খুশির সঙ্গে আমৃত্যু এই সম্পর্ক থাকবে আমার'।