উত্তমকুমার নাকি লুকিয়েছিলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির বাথরুমে। চমকে উঠলেন তো? আমার-আপনার মতোই সেদিন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথায় অবাক হয়েছিলেন 'অপুদা', অর্থাৎ শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। সৌজন্যে তাঁর শো 'অপুর সংসার'। যে শোটি কিনা ২০১৭-তে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। 'অপুর সংসার'-এ অতিথি হয়ে এসে অনেক অজানা কথা শেয়ার করেছিলেন টলিপাড়ার অনেক তারকা। তেমনই একটি এপিসোডে হাজির হয়েছিলেন একসময়ের বাংলা সিনেমায় উত্তমকুমারের জনপ্রিয় দুই নায়িকা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ও মাধবী মুখোপাধ্যায়।
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা ছিলেন ভীষণ কড়া। মেয়ে যতই অভিনয় করুক রাত ১০টার মধ্যে বাড়ি তাঁকে ঢুকতেই হত। অভিনেত্রীর বাবা নিজের হাতে দরজায় তালা দিতেন। কথা প্রসঙ্গেই সাবিত্রীদেবীকে শাশ্বত প্রশ্ন করেন, উত্তমকুমারকে বাড়ির বাথরুমে কেন লুকোতে হয়েছিল? সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘ওই যে রাত ১০টার পর বাড়িতে এসেছিলেন। তারপর আর বের হতে পারেননি। বাথরুমে ঢুকে বলেন, সাবু আমি এখানে। বাবাকে খুব ভয় পেতেন।’
একসময় সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে উত্তমকুমারের প্রেম নিয়ে বেশ চর্চা শুরু হয়। সেই প্রেম নিয়ে লোকের মুখে আলোচনা, পেপারে লেখালিখি নিয়ে উত্তমকুমারের বাড়িতেও নাকি সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে উত্তমকুমার নিজে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। জানা যায়, উত্তমকুমার তেমনই একদিন আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন, সেই আড্ডায় সাবিত্রী, তাঁর দিদি, জামাইবাবু, মা সবাই ছিলেন, শুধু তাঁর বাবা নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। বেশ রাত হয়ে যায়। হঠাৎ-ই সাবিত্রীদেবীর বাবার ঘুম ভাঙে, তিনি খিল খুললে সেই আওয়াজ পৌঁছোয় উত্তমকুমারের কানে। বাবা আসতেই সবাই চুপ। উত্তমকুমার গিয়ে লুকিয়েছিলেন বাথরুমে। তিনি নাকি চৌবাচ্চায় ডুবে বসেছিলেন বলে শোনা যায়। 'অপুর সংসার'-এ উঠে এসেছিল সেই প্রসঙ্গ…।
হিন্দি ছবিতেও তাঁরা কেন কাজ করেননি? শাশ্বতর প্রশ্নে মাধবী মুখোপাধ্যায় জানান, ‘আমার ইচ্ছা ছিল না। এখানেই খুশি ছিলাম। একটা লোকের সঙ্গেই শুধু তর্কে পারিনি, সেটা রাজ কাপুর। মেরা নাম জোকার ছবিতে কাজের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।’ শাশ্বত বলেন মাধবী মুখোপাধ্যায় আউটডোর শ্যুটিংয়ে গিয়ে লুকিয়ে কাউকে নয়নতারা ফুল ছুড়ে মেরেছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে মাধবী বলেন,ছদ্মবেশীর শ্যুটিংয়ে এলাহবাদ গিয়েছিলেন। একবার পান চাইতে জহর রায় তাঁদের ঘরে গিয়েছিলেন। মাধবী মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘জহরদা আবিষ্কার করেন একটা দরজা আছে, সেখানে পর্দা দেওয়া তাতে বড় একটা ফুটো। সেই ফুটো দিয়ে দেখা যায় উত্তমবাবু-সুপ্রিয়াদেবীর ঘর। জহরদা সেখান থেকে উতু উতু করে ডাকছেন। আমরা নিষেধ করি। পরে আমরাও উপরে উঠে প্রথমে দেখে নি ওঁরা ঠিক আছেন কিনা, তারপর উপর থেকে নয়নতারা ফুল ফেলেছিলাম। বলেছিলাম, সুপ্রিয়া তোমার পতিসেবার দেবতারা তুষ্ঠ হয়ে পুষ্পবৃষ্টি করছেন।’