বহুতল থেকে ঝাঁপ, প্রয়াত মালাইকা আরোরার বাবা অনিল মেহতা। ১১ সেপ্টেম্বর, বুধবার, এমনই এক খারাপ খবরে হতবাক বলিপাড়ার অনেকেই। প্রথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে করছে পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কোনও সুইসাইড নোট পায়নি। ঠিক কেন মৃত্যু, সেবিষয়টিও এখনও স্পষ্ট নয়। শুধু জানা যাচ্ছে, মালাইকার বাবা অনিল মেহতা অসুস্থ ছিলেন।
কিন্তু এই মৃত্যুর খবরের পর অনেকেরই প্রশ্ন, কে ছিলেন এই অনিল মেহতা?
জানা যাচ্ছে,মালাইকার বাবা অনিল মেহতা মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত ছিলেন। অনিল মেহতা ছিলেন পঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার ফাজিলকা শহরের বাসিন্দা। সনাতন হিন্দু পরিবারে জন্ম হয়েছিল অনিল মেহতার। তিনি বিয়ে করেছিলেন জয়েস পলিকার্প (মালাইকার মা) যিনি আবার ছিলেন মালায়ালী ক্রিশ্চান ছিলেন। যদিও পরবর্তী সময়ে অনিল মেহতা ও জয়েস পলিকার্পের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়, তাঁদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি।
এর আগে ২০২২-এ মালাইকা একটি সাক্ষাৎকারে নিজের 'অদ্ভুত' শৈশব সম্পর্কে মুখ খুলেছিলেন, বলেছিলেন নিজের জীবনের শুরুর দিকে তিনি কীভাবে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন। স্মৃতিচারণ করে মালাইকা বলেন, তাঁর যখন মাত্র ১১ বছর বয়স, তখন তাঁর বাবা-মা অনিল মেহতা এবং জয়েস পলিকার্পের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মালাইকার বোন অমৃতা অরোরার বয়স তখন ছিল মাত্র ৬। মালাইকা ও অমৃতা তখন তাঁদের মায়ের সঙ্গে থানে থেকে চেম্বুরে চলে যান। তবে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছিল, তাঁকে জীবনে স্বাধীনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছিল বলে জানান মালাইকা।
যদিও সাম্প্রতির সময়ে মালাইকার বাবা-মা অনিল মেহতা ও জয়েস পলিকার্পকে প্রায়দিনই একসঙ্গেই দেখা যেত। বর্তমানে তাঁরা আবারও একসঙ্গেই থাকতেন বলেই জানা যায়।
এদিকে মালাইকা অরোরার বাবা অনিল মেহতা আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে, এখন জানা গেছে যে পুলিশ কর্মকর্তারা তার মা জয়েসের বক্তব্য রেকর্ড করেছেন। সূত্রের দাবি, মালাইকার মা পুলিশের কাছে তার জবানবন্দিতে বলেছেন যে অনিল বারান্দায় বসে প্রতিদিন সকালে খবরের কাগজ পড়তেন। তিনি পুলিশকে বলেন যে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পরেও, গত কয়েক বছর ধরে তাঁরা আবারও একসঙ্গেই থাকতে শুরু করেছিলেন।
জয়েস পুলিশকে আরও জানান, যে বুধবার সকালে যখন তিনি বসার ঘরে তাঁর প্রাক্তন স্বামীর চটি দেখেন, তখনই তিনি তাঁকে বারান্দায় খুঁজতে যান। তবে তিনি তাঁকে সেখানে খুঁজে পাননি। তখনই বারান্দা থেকে ঝুঁকে তাকিয়ে থাকেন। সেসময় বিল্ডিং-এর নিরাপত্তারক্ষীরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন। জয়েস পুলিশকে আরও জানান যে অনিল মেহতা অসুস্থতায় ভুগছিলেন না। তাঁর শুধু হাঁটুতে ব্যথা ছিল। তিনি মার্চেন্ট নেভি থেকে ভিআরএস নিয়েছিলেন।