রণধীর কাপুর এবং ববিতা সেই সমস্ত মানুষদের মধ্যে পড়েন যাঁরা বিবাহ বিচ্ছেদের পরও বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। প্রেমের করেই ১৯৭১ সালে বিয়ে হয়েছিল দুজনের।কাপুর পরিবারের বড় বউমা হয়ে এসেছিলেন ববিতা। তারপর সম্পর্কের টানাপড়েনে ১৯৮৮ সালে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। তবে আইনি পথে হেঁটে বিচ্ছেদ নেননি কেউই। খাতায়-কলমে আজও ববিতা কাপুই রয়ে গিয়েছেন। দুই মেয়ে, করিনা আর করিশ্মার জন্য বন্ধুত্বের সম্পর্ককে বজায় রেখেছেন দুজনেই।
আজ অভিনেতার ৭৪তম জন্মদিন। হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে সম্পর্কে টানাপোড়েন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রণধীর জানিয়েছেন, ববিতা এবং তাঁর সম্পর্কের রসায়নের গল্প। কীভাবে তাঁরা করিশ্মাকে এবং করিনাকে বড় করছেন সেই গল্প।
২০১৭ সালে এক সাক্ষাৎকারে রণধীর জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের পর তাঁর এবং ববিতার সম্পর্ক আগেই মতোই ছিল কোনও পরিবর্তন হয়নি। ‘ও আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাকে দুটো মিষ্টি সন্তান উপহায় দিয়েছে ও। আমরা দুজনেই পরিণত মস্তিষ্কের মানুষ, দুজনের সিদ্ধান্তেই আমরা আলাদা থাকতে শুরু করি। কিন্তু আমরা একে অপরের শত্রু নই’। এমনকি করিনা এবং করিশ্মাও তাঁদের মা-বাবার সঙ্গে সব সময় সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোস্ট করেছেন। তাঁরা পরিবারের গেট-টুগেদারে দেখা করলে সেই ছবিও একসঙ্গে পোস্ট করা হয়েছে।
অভিনেতা রণধীর কাপুর আরো জানিয়েছিলেন, তিনি প্রচুর নেশা করতেন এবং রাতে মদ্যপ অবস্থায় দেরি করে বাড়ি ফিরতেন। তাঁর এভাবে জীবনযাপন ববিতার একেবারেই পছন্দ ছিল না, যদিও তাঁরা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন আলাদা থাকার। এরপরই তিনি মা-বাবার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ববিতার তাঁদের দুই মেয়ে করিশ্মা ও করিনাকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করে। বর্তমানে তাঁদের সন্তান সুপ্রতিষ্ঠিত। একজন বাবা হিসেবে এর থেকে বেশি তিনি আর কিছুই চান না, মন্তব্য রণধীরের।
ডিভোর্স করেননি কেন? এই প্রশ্ন অনেকবার শুনতে হয়েছে রণধীর-ববিতা দু’জনকেই। রণধীর জানিয়েছেন, তাঁদের দ্বিতীয় বার বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না। দু’জনের মতের মিল হচ্ছিল না। একে অন্যের জীবনধারা মেনে নিতে পারেননি। তাই আলাদা থাকতেন। চিরতরে সম্পর্ক শেষ করে ফেলার ইচ্ছে ছিল না।
মোজো স্টোরিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে করিনা বলেছিলেন, তাঁর বাবা মায়ের সম্পর্কের সমীকরণ দারুণ। যখনই তাঁরা অনুভব করতে পারেন, এক ছাদের নীচে তাঁদের থাকা সম্ভব নয়, তাঁরা দুজনে আলাদা থাকতে শুরু করেন। তবে যখনই প্রয়োজন হয়েছে তাঁরা একজোট হয়েছে। সন্তানদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পালন করেছেন। তিনি এবং করিশমা এটা খুব ছোট বয়সেই বুঝে গিয়েছিলেন। তাঁরা হয়তো একছাদের নীচে থাকেন না তবে গত ৩৫ বছর ধরে এভাবেই সম্পর্কের বজায় রেখে চলেছেন। আলাদা থাকলেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায়, একসঙ্গে সন্তানদের দায়িত্ব পালন করা যায় সেটা ববিতা ও রণবীর কাপুর সুচারুভাবে করে দেখিয়েছেন।
১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন রণধীর কাপুর এবং ববিতা কাপুর। ‘আজ অউর কাল’ ছবির মাধ্যমে সিনেমায় অভিষেক হওয়ার পরই বিয়ে সেরে ফেলেন রণধীর। ছবিতে রণধীরের বিপরীতে ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ববিতা কাপুর।