চলতি মাসের গোড়াতে ভারত ভ্রমণ এসেছেন বিখ্যাত জার্মান পরিচালক উইম ওয়েন্ডার্স। ট্য়ুরের নাম তাঁরই এক ছবির নামে - ‘কিং অফ দ্য রোড’। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি ভ্রমণ করলেও ভারত ছিল না সেই তালিকায়। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ঐতিহ্য এবং সিনেমার প্রতি ধর্মপ্রাণ মনোভাব তাঁকে আকৃষ্ট করে। আর সেই টানেই ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন শহরে দেখা যাচ্ছে ‘পারফেক্ট ডেজ’-এর পরিচালককে।
গতকাল ১৬ ফেব্রুয়ারি নন্দনে প্রদর্শিত হয় তাঁর ‘প্যারিস-টেক্সাস’। ১৯৮৪-তে ছবিটি কান ফিল্ম ফেস্টিভালে সেরা ছবির সম্মান পায়। ১৯৮৫ সালে বাফটা-তে ছিনিয়ে নেয় সেরা পরিচালকের সম্মান। মুম্বাই, পুণে, তিরুবনন্তপুরম, দিল্লি এবং কলকাতা - পাঁচ শহর এই মাসে তার ভারত সফরের তালিকায়।
রবিবার একেই ছুটির দিন। তায় বিখ্যাত পরিচালককে দেখবার জন্য বিকেল নাগাদ উপচে পড়া ভিড়ে ছেয়ে যায় নন্দন চত্বর। শিশির মঞ্চ থেকে লাইন শুরু হয়ে শেষ হয় ফুড ক্যান্টিনে।
আরও পড়ুন - Mikey Medison: প্রকাশ্যে এবারের বাফটার পুরস্কার তালিকা, কোন তারকারা জিতলেন শিরোপা?
উইম ওয়েন্ডার্সের অন্যান্য ছবির মতো এই ছবিটিকেও ঘিরে থাকে একপ্রকার মেট্রোপলিটান নির্জনতা ও একাকীত্ব। টকটকে লাল রং, ডিজায়ারের প্রতীকী হয়ে ধাওয়া করে বেড়ায় প্রধান চরিত্র ট্র্যাভিসকে। ছন্নছাড়া, আকুল প্রেমিক ট্র্যাভিস পাড়ি দেয় পথের পাঁচালির অপুর মতো এক অন্তহীন, উদ্দেশ্যহীন পথে। শেষমেষ তার চরিত্রের স্বভাবগত ফ্রয়েডীয় ডেথড্রাইভকে স্বীকার করে নেয়।
ফিল্মবোদ্ধাদের মতে, এই চলচ্চিত্রে ফরাসি মনোবিশ্লেষক জাক লাকাঁ উপস্থাপিত মানবের তিনটি দশা - দ্য সিমবলিক, দ্য ইম্যাজিনারি, দ্য রিয়াল-এর প্রতিফলন দেখা যায়। মুখ্য চরিত্রটিও বারবার এমন একটি জায়গায় যাওয়ার কথা বলে, যেখানে কেউ তাকে চিনবে না, তার কোনও ভাষা থাকবে না।
রবিবার নন্দনে সিনেমা পরবর্তী আলোচনায় পরিচালক বলেন, পৃথিবীর একেক দেশের একেকরকম একাকীত্বকে তিনি ছুঁয়ে দেখতে চান। ছবি শেষে ট্র্যাভিসের শেষ কীর্তিটি তার কাছে কোনো ট্র্যাজিক সমাপ্তি নয়. বরং ‘হিরোইক অ্যাক্ট অফ লাভ’।
আরও পড়ুন - Shakira: স্থগিত কনসার্ট, অসহ্য পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে শাকিরা! কী হয়েছে?
১৯শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তার মোট ষোলটি ছবি নন্দন ১, বসুশ্রী ও পিভিআর-আইনক্স সাউথ সিটি প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হবে। জিডি বিড়লা সভাঘরে থাকবে একটি মাস্টার ক্লাস। ইতিমধ্যে যার পাস সংগ্রহের জন্য ম্যাক্স মুলার ভবনেও মানুষ আনাগোনা করছেন।
তাঁর ছবিগুলির মধ্যে কলকাতায় দেখানো হবে - ‘উইংস অফ ডিজায়ার’, ‘টোকিও গা’, ‘এ লিস্ট ইন দ্য সিটিজ’, ‘কিংস অফ দ্য রোড’, ‘দ্য অ্যামেরিকান ফ্রেন্ড’ ইত্যাদি।