ফিল্মফেয়ার থেকে আইফা কিংবা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সিনে দুনিয়ার মানুষদের তাঁদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এদেশে অ্যাওয়ার্ড সেরেমানির অভাব নেই। তবে ভারতের সবচেয়ে পুরোনো ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, 'বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাওয়ার্ড' (BFJA)। সেই বিএফজেএ এখন কালের নিয়মে পাল্টে হয়েছে 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড'। রবিবার কলকাতার ঐতিহ্যবাহী প্রিয়া সিনেমা হলে বসেছিল WBFJA-র গ্র্যান্ড আসর। এই নিয়ে চতুর্থ বর্ষে পা রাখল সিনেমার সমাবর্তন। বছর শুরুটা হল বাংলা সিনেমার সেরাদের স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে। বাংলার ফিল্ম সমালোচক এবং সাংবাদিকদের বিচারেই সেরা পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে ওঠে। সাংবাদিকদের থেকে স্বীকৃতি পাওয়াটা বরাবরই বেশি স্পেশ্যাল তারকাদের কাছে।
এই বছর WBFJA-র মঞ্চে বাজিমাত করল নগরকীর্তন। সেরা ছবি, সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা সহ মোট আটটি বিভাগে সেরার সম্মান ছিনিয়ে নিয়েছে এই ছবি।
এবছর সংগঠনের পক্ষ থেকে এবছর জীবন কৃতি সম্মান(লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট) জানানো হয় সত্যজিত্ রায়ের একাধিক ছবির সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়কে। এর পাশাপাশি পপ্যুলার(১৭) এবং টেকনিক্যাল(৮) সেগমেন্ট মিলিয়ে মোট ২৫টি বিভাগে সেরাদের বেছে নিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন।
এদিনের অনুষ্ঠানে ভিড় জমিয়েছিলেন টলিউডের রথী-মহারথীরা। হাজির ছিলেন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, সন্দীপ রায়, রাইমা সেন, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেনরা।
এদিন পরিণীতার জন্য সেরা অভিনেত্রীর শিরোপা পেলেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। পুরস্কার পেয়ে আপ্লুত পর্দার মেহুল। স্বামী তথা পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে এই পুরস্কার উত্সর্গ করেছেন শুভশ্রী।
নগরকীর্তন ছবিতে পুঁটির ভূমিকায় ঋদ্ধির অভিনয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আগেই জাতীয় পুরস্কারের সম্মান বাংলাকে এনে দিয়েছেন ঋদ্ধি। এই ছবির জন্যই WBFJA-র সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হলেন ঋদ্ধি সেন।
এক নজরে দেখে নিন বিজয়ীদের নাম
সেরা ছবি- নগরকীর্তন (কৌশক গঙ্গোপাধ্যায়)
সেরা পরিচালক- কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (নগরকীর্তন)
সেরা অভিনেতা (পপুল্যার)- [যুগ্মভাবে] প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় (গুমনামি) ও দেব (সাঁঝবাতি)
সেরা চিত্রনাট্য- কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (নগরকীর্তন)
সেরা সহ অভিনেত্রী- [যুগ্মভাবে] সুদীপ্তা চক্রবর্তী (জ্যেষ্ঠপুত্র) ও লিলি চক্রবর্তী(সাঁঝবাতি)
সেরা সহ অভিনেতা- রুদ্রনীল ঘোষ (কেদারা)
সেরা নবাগত পরিচালক- ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত (কেদারা)
সেরা নবাগত অভিনেত্রী- তুহিনা দাস (ঘরে বাইরে আজ)
সেরা অভিনেতা (কমেডি)- অনির্বাণ ভট্টাচার্য (বিবাহ অভিযান)
সেরা অভিনেতা (নেগেটিভ)- ঋত্বিক চক্রবর্তী (ভিঞ্চি দা)
সেরা গায়িকা - লগ্নজিতা ঘোষ (প্রেমে পড়া বারণ, সোয়েটার)
সেরা গায়ক- অনির্বাণ ভট্টাচার্য (কিচ্ছু চাই নি আমি, শাহজাহান রিজেন্সি)
সেরা গীতিকার- দীপাংশু আচার্য (কিচ্ছু চাই নি আমি, শাহজাহান রিজেন্সি)
সেরা মিউজক- অনুপম রায় ও প্রসেন (শাহজাহান রিজেন্সি)
সেরা ব্যাক গ্রাউন্ড স্কোর- প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়(নগরকীর্তন)
সেরা সিনেমাটোগ্রাফার- শুভঙ্কর ভর (কেদারা)
সেরা সাউন্ড ডিজাইনার-অনির্বাণ সেনগুপ্ত (কেদারা)
সেরা সম্পাদক- শুভজিত সিংহ
সেরা শিল্প নির্দেশক- শিবাজি পাল (গুমনামি)
সেরা মেক আপ- রাম রেজ্জাক (নগরকীর্তন)
সেরা কস্টিউম- গোবিন্দ মন্ডল (নগরকীর্তন)