কদিন আগেই সিংহি পার্ক সার্বজনীন পুজোর এক বিতর্কিত ভিডিয়ো সামনে আসে। যেখানে দেখা যায়, এক ফুচকাওয়ালা বৃদ্ধের দোকান রাস্তায় ফেলে দিয়েছে পুজো কমিটি। যা নিয়ে প্রতিবাদে সামিল সেখানে উপস্থিত কিছু মানুষজন। ‘chebladada’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তা শেয়ার করা হয়েছিল। যদিও পরে ফেসবুকে তা অনেকেই রিশেয়ার করেছেন।
এবার ছ্যাবলা দাদা-র আরও একটি পোস্ট সামনে এল। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, ‘এক্ষুণি আমার কাছে সিংহি পার্ক পুজো কমিটি থেকে ফোন এসেছিল। ওনারা বলছেন পোস্টটা রিমুভ করে দিন, আমরা ওঁকে সাসপেন্ড করেছি। ক্ষমা চেয়ে ভিডিয়ো পাঠাতে বলেছি, পেলে আপলোড করছি।’ সঙ্গে তিনি নিজের পোস্টেই আরও জানান, ‘ওঁকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাই ভালো করে পুজো কাটান আর অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করুন।’
কী হয়েছিল সেদিন?
ছ্যাবলাদাদা ওরফে দেবদীপ চক্রবর্তী তাঁর আগের পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আজকে সিংহি পার্ক-এর ঠাকুর দেখতে গিয়ে এই অদ্ভুত ঘটনার সামনে পড়লাম, চোখের সামনে এই ফুচকা কাকুর ঠেলা ধরে ফেলে দিলেন সিংহি পার্ক এর একজন সদস্য, যিনি ভিডিয়োটি করেছেন তাঁকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না, কিন্তু যেটা হয়ছে ঠিক হয়নি, যদি পুজো কমিটির সমস্যাই থাকতো পুলিশ ডেকে আইনি পদক্ষেপ নিতেই পারতেন। এনারা সেটা না করে নিজেরাই আইন হাত এ তুলে নিলেন।’
‘এরপর আমরা যখন প্রতিবাদ করতে যাই সেখানে সবার সামনে এক মহিলা এই লোকটিকে একটা চড় মেরে বসে। কমিটির সদস্যরা নিজেদের দোষ না দেখে তাদের ওপরেও চড়াও হয় এবং আমরা তাদের সঙ্গে গিয়েছিলাম বলে আমাদেরও পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। হয়তো মহিলাটি হাত তুলে ঠিক করেননি কিন্তু তার জন্য আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের পুলিশের হুমকি দেওয়ার কারণ বুঝলাম না। রীতিমতো আমার হাত ধরে রাখা হয় যে, আপনি কেনো এসেছেন ওদের সঙ্গে এটা বলে’। আরও লেখা হয়েছিল সেই পোস্টে।
সিংঘি পার্কের বক্তব্য:
সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই সিংহি পার্ক পুজো কমিটি তাঁদের ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম পেজে লেখেন, ‘গতকাল রাত্রে (সোমবার) আমাদের পূজা মণ্ডপের কাছে একটি অনঅভিপ্রেত ঘটনা ঘটে যা আমাদের পুজো কমিটি কখনই সমর্থন করে না। উপরোক্ত ঘটনায় যে ব্যক্তি দায়ী ছিলেন তার বিরুদ্ধে আমাদের পুজো কমিটি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকেও (ফুচকাওয়ালা) যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস রাখি আমাদের তরফ থেকে ভবিষ্যতে এই ধরণের কোনও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না’।
পরে আজকালকে সিংহি পার্কের পুজো কমিটির সদস্য ভাস্কর নন্দী জানিয়েছেন, ‘ফুচকা বিক্রেতা আমাদের পুজো মণ্ডপের প্রবেশপথের সামনে ফুচকা বিক্রি করছিলেন। যেহেতু তিনি একটি কোম্পানির ব্র্যান্ডিং-এর সামনে ডালাটি রেখেছিলেন তাই তাঁকে দুপুরেই সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তিনি রাজি হননি। সন্ধ্যায় ভিড় বাড়লে কমিটির সদস্যরা যখন তাঁকে সরে যাওয়ার জন্য কথা বলছিলেন তখন এক সদস্যের হাত লেগে ফুচকার ডালা মাটিতে পড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর বিক্রির সামগ্রী। ঘটনার কথা জানতে পারার পরেই সেই সদস্যকে বহিষ্কারের পাশাপাশি ওই ফুচকা বিক্রেতাকে ৩৬০০ টাকা সিংহী পার্কের তরফে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।'’