ইতিমধ্যেই আরজি কর-কাণ্ডে মুখ খুলেছেন একাধিক তারকা। ১৪ অগস্ট রাত ১১টায় প্রতিবাদে রাস্তায় নামর ডাকও দেওয়া হয়েছে। একজন ডক্তারের, তাঁরই কর্মস্থলে এমন ভয়ানক পরিণতি মানতে পারছে না কেউই। প্রতিবাদে সামিল সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। ভিডিয়ো বানিয়ে তাতে গলা মেলালেন বং গাই কিরণ দত্ত-ও।
বং গাইকে বলে শোনা গেল, ‘সমস্যাটা কোথায় জানেন, আরজি করের ঘটনা নিয়ে আমরা সবাই প্রতিবাদ করছি। হয়তো জাস্টিস পাব। কিন্তু এমন অনেক ঘটনা, আমরা জানতেই পারি না। বা জানার চেষ্টাই করি না। প্রতিবাদ হয় না। জাস্টিসও পাই না। একজন মহিলা ডাক্তার একা কী করছিল, মৃত্যুর পরেও এই প্রশ্ন উঠে আসে। বাসে-ট্রামে সুযোগ সুবিধা নেওয়া, নিজের পরিবারেই যৌন হেনস্থা, এগুলোর বিরুদ্ধে তাই আওয়াজ প্রতিবাদ ধীরে ধীরে কমে আসে। কারণ সেই একই প্রশ্ন করা হবে, ও কেন গিয়েছিল। একা কী করছিল। তারপর সেই নিঃস্তব্ধ ভয়ের পরিবেশে, হঠাৎই এরকম ঘটনার সামনে এসে সব উল্টে পাল্টে আমাদের অনেক পিছনে নিয়ে যায়। তাই যে ঘটনাগুলো সামনে আসে তাঁর শাস্তি এমনটাই দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত যে, যাতে এরকম ভাবনা আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ে আত্মা কেঁপে ওঠে। এবং সঠিক মানুষের শাস্তি হওয়া খুব প্রয়োজন। আশা রাখছি চরম থেকে চরম শাস্তি হবে। আমাদের মনের প্রতিবাদের আওয়াজ আরও জোরালো হয়ে উঠবে। আর সমাজ থেকে ও একা কী করছিল, এই প্রশ্নগুলো হারিয়ে যাবে।’
বং গাইয়ের প্রেমিকা, আরেক বিখ্যাত ইনফ্লুয়েন্সার অন্তরা মন্তব্য করলেন, ‘যেদিন মেয়েদের দিকে আঙুল তোলা বন্ধ হবে সেদিন হয়তো এই সমস্যার মূল সমাধান খুঁজবে মানুষ’।
আরেক নেট-নাগরিক লিখলেন, ‘দাদা আমাদের দেশ যতই স্বাধীন হোক, যতই বলা হোক ছেলে মেয়ে সমান, দিনের শেষে সব দোষ মেয়েদের ওপরই যায়। যে মেয়েটাকে মারা হলো দোষটা তাঁকেই দেওয়া হল, কেন না সে মেয়ে হয়ে রাতে একা কী করছিল, আজব সমাজ আজব সমাজ ব্যবস্থা।’
তৃতীয়জন লেখেন, ‘একদম ঠিক। আর এখন একদিন, দুদিন এটা নিয়ে তোলপাড় হবে… ব্যাস তারপর সব চুপ… আবার সেই এক জীবন, আবার সেই অপরিবর্তিত সমাজ… ধিক্কার।’
প্রসঙ্গত, সেই ডাক্তার মেয়েটির একা থাকা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিল সেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ (চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি) সন্দীপ ঘোষকে রাতারাতি ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করা হয়। যা নিয়ে এদিন কলকাতা হাইকোর্ট রীতিমতো তুলোধনা করে রাজ্য সরকারকরে। মামলার শুনানি চলাকালীন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সোমবার সকালে বলেছিলেন সরকারি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। বিকেলে তাঁকেই অন্য কলেজের মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।' এমনকী, '১২ ঘণ্টার মধ্যে পুরস্কৃত হয়ে গেলেন?' এমন কথাও বলা হয়। এখানেই শেষ নয়, হাই কোর্ট সন্দীপ ঘোষকে লম্বা ছুটিতে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।