অভিনেতা জায়েদ খানকে মনে আছে? হ্য়াঁ 'ম্যায় হুঁ না' ছবির 'লক্ষ্মণ'-এর কথাই বলছিলাম। 'চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে' ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন জায়েদ। ব্যক্তিগত জীবনে সুজান খানের ভাই, হৃত্বিক রোশনের প্রাক্তন শ্যালক তিনি। অভিনয় কেরিয়ারে জায়েদ অভিনীত প্রায় সবকটি ছবিই সুপার ফ্লপ, হিট মাত্র একটিই। আর ‘সেটা ম্যায় হুঁ না’। তবে কি জানেন বলিপড়ার এই ফ্লপ হিরো ১৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। আল্লু অর্জুন, প্রভাস, রণবীরদের থেকেও ধনী তিনি। কিন্তু কীভাবে?
অভিনয়ে ফ্লপ হিরো হলেও ব্যবসায়ী হিসাবে সফল জায়েদ খান। আর তাই তিনি সফল, নিজের সমসাময়িকদের চেয়ে অনেক ধনী।
জায়েদ খান
ব্যক্তিগত জীবনে পরিচালক সঞ্জয় খানের ছেলে তিনি। ফিরোজ খানের ভাগ্নে। জায়েদ ২০০৩ সালে, মাত্র ২২ বছর বয়সে অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখেন। পরে তিনি ‘ম্যায় হুঁ না’ A দশ ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। এই দুটি ছবিই বক্স অফিসে ভালো ব্যবসা করেছিল। তবে হিট বলতে ‘ম্যায় হুঁ না’। আর ‘দশ’ ছবিটি গড়পড়তার চেয়ে বেশি আয় করেছিল। তবে হিরো হিসাবে কোনওদিনই আলাদাকে করে সাফল্যের স্বাদ পাননি জায়েদ। ২০০৫-১২ সাল পর্যন্ত জায়েদ আরও ১০টি ছবিতে অভিনয় করেন। আর সেই সবকটি ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। এর মধ্যে ‘ফাইট ক্লাব’, ‘মিশন ইস্তাম্বুল’ এবং ‘তেজ’-এর মতো হাই-প্রোফাইল ছবি ছিল।
জায়েদের সর্বশেষ সিনেমা ছিল ‘শরাফত গয়ি তেল লেন’, যেটি কিনা ২০১৫ সালে মুক্তি পায়। এটিও বক্স অফিস ফ্লপ। ২০১৭ সালে, তিনি টিভি শো ‘হাসিল’-এর হাত ধরে অভিনয়ে ফিরে আসেন। জায়েদ মোট ১৫টি ছবিতে কাজ করেছিলেন, যার মধ্যে হিট শুধুই ১টি, ১৩টি ফ্লপ। আর একটা গড় উপার্জনকারী ছবি।
আরও পড়ুন-জন্মদিনের আগেই হাসপাতালে ভর্তি, বিছানায় শুয়ে মা ও স্ত্রীর কাছে কেন ক্ষমা চাইলেন সাহেব?
জায়েদ খানের ব্যবসা ও সম্পত্তি
অভিনয়ে ফ্লপ হলেও জায়েদ ব্যবসায়ী হিসাবে সফল। তিনি বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন স্টার্টআপ এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। ২০২৪ সালে, ET Now রিপোর্ট বলছে, তিনি প্রায় 1500 কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। যদিও জায়েদ নিজের মুখে কোনওদিনও নিজের সম্পত্তির পরিমাণ কখনও কোনও কথা বলেনন, স্বীকারও করেননি বা অস্বীকারও করেনি। তবে এমন কথা প্রসঙ্গে শুধুই হেসেছেন। আর যদি একথা ঠিক হয়, তবে বলাই বাহুল্য, সম্পত্তির নিরিখে জায়েদ রণবীর কাপুর (৫৫০ কোটি), প্রভাস (৪০০ কোটি), আল্লু অর্জুন (৩৫০ কোটি) এবং রাম চরণের (১৩০০ কোটি রুপি) মতো তারকাদের চেয়েও বেশি ধনী।
জায়েদ খানের সম্পত্তির রহস্য
এক সাক্ষাৎকারে জায়েদকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তাঁর কোনও আর্থিক পরামর্শ আছে কিনা? তবে সেসময় তিনি শুধুই বলেছিলেন যে 'নিজের সাধ্যের মধ্যে থাকা উচিত'। তিনি আরও বলেন, 'একটা কথা আছে, ‘যদি তোমার ফেরারি কেনার সামর্থ্য থাকে, তাহলে একটা মার্সিডিজ কেনো, আর যদি তোমার একটা মার্সিডিজ কেনার সামর্থ্য থাকে, তাহলে একটা ফিয়াট কেনো। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে রয়েছি, আর সেখানে আপনার ভাবমূর্তিটা খানিক এমনই...। আপনার সেভাবেই চলা উচিত, যেটা আপনি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। কিছু মানুষ এটা মেনে চলেন, তবে ৮০ শতাংশ মানুষই এটা মেনে চলেন না। তাঁরা তাই ভেঙে পড়েন। তাঁদের ইএমআই আছে, ঋণ আছে, তারপরও তাঁরা বোকা বোকা কাজ করে বসেন। এটা আসলে একটা খরগোশের গর্ত।’
সমসাময়িক চাপকে তিনি 'ভয়ানক, অশ্লীল, অপরাধী' হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন অভিনেতা। তাঁর কথায়,'আমি জানি না এটা আদৌ তরুণদের জন্য এগিয়ে যাওয়ার সঠিক পথ কিনা, তবে মেরুদণ্ড আর চরিত্র ঠিক রাখুন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে জায়েদ ইনস্টাগ্রামে অভিনয়ে ফেরার পরিকল্পনার কথা জানালেও তাঁর কামব্যাক প্রজেক্ট নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতে চাননি। অভিনেতা জানিয়েছেন, তিনি নিজের ব্যবসা ও অভিনয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখবেন।