জি বাংলা সারেগামাপা-র মঞ্চে সেনসেশন হয়ে উঠে উঠেছেন আরাত্রিকা সিনহা। বাঁকুড়ার ভাদুলের মেয়ে সে। নবম শ্রেণির ছাত্রী। তাঁর কন্ঠে গণসংগীত শুনে মুগ্ধ হয়েছেন বিচারক থেকে দর্শক। শুধু গণসংগীত নয়, কিশোরী আরাত্রিকার কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনেও চোখ ছলছল করে উঠেছে বিচারকরদের।
চলতি সপ্তাহে শনিবারের এপিসোডে আরাত্রিকার চোখের জল বাঁধ মানল না। বিচারকদের থেকে স্ট্যান্ডিং ওভেশন মেলার পরেও কান্না থামল না তাঁর। কিন্তু কেন? রথীজিৎ ভট্টাচার্যের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে কেঁদে ফেলল আরাত্রিকা।
মুখোমুখি চ্য়ালেঞ্জ রাউন্ডে আরাত্রিকার সামনে ছিল কৌশিকি-ইন্দ্রদীপের টিমের খুদে সদস্যা অঙ্কনা। ঢালাও মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট নয়, শুধুমাত্র পিয়ানো আর বাঁশি দুই যন্ত্রের সঙ্গতেই গাইতে হবে দুজনকে। দু-হাতে সেই চ্যালেঞ্জ লুফে নেন আরাত্রিকা। রবি ঠাকুরের ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’ গেয়ে শোনায় সে। তাঁর পারফরম্যান্স শেষে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে হাততালিতে ভরিয়ে দেন জোজো-জাভেদ-কৌশিকিরা। মঞ্চে ছুটে আসেন ইমন, জড়িয়ে ধরেন বছর পনেরোর আরাত্রিকা।
রাঘব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আরাত্রিকা ক্লাস নাইনের ছাত্রী। তোমার বয়সের কোনও ছেলেমেয়ের কাছে আমি রবীন্দ্রনাথের গান এইভাবে শুনিনি,সত্যি বলছি’। একই সুর অন্তরা মিত্রর গলায়। তিনি বলেন, ‘তোমার অন্তরের যে শিল্পসত্ত্বা তার বয়স তোমার বয়সের চেয়ে অনেক বেশি, তাঁকে আমি প্রণাম করি’।
আরাত্রিকা যখন প্রশংসায় ভাসছে, তখন গর্বে বুক ফুলে উঠে সারেগামাপা-র প্রধান গ্রুমার রথীজিৎ ভট্টাচার্যর। এরপর মাইক হাতে তিনি বলেন,'আরাত্রিকার গান শুনেই বোঝা যায় ওহ খুব সেনসিবল মেয়ে। আমার একটা কথা মনে পড়ছে। কোনও একটা এপিসোডে ওহ যেমন গায়, সেদিন তেমন হয়নি। ও যে গান গায় সেটা বিরাট করে অ্যারেঞ্জ করা হয়, সেদিনও আমি তেমনটাই করেছিলাম। ওহ আমার পাশে এসে বলল, স্যার আজ আমি ভালো গাইতে পারেনি না? আমি বললাম, ভালোই গেয়েছিস, আরেকটু ভালো হতে পারত।'
রথীজিৎ আরও জানান, তাঁর পরিশ্রমের মান রাখতে না পারায় চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে আরাত্রিকার। তিনি বলেন, ‘আমি এতদিন ধরে কাজ করি,কেউ কোনওদিন এসে আমাকে বলেনি যে আমি তোমার পরিশ্রমের মান রাখতে পারলাম না। সেই কারণেই বললাম, ওর মতো সেনসিবল মেয়ে কম দেখেছি। ওর ভিতরটা এত খাঁটি না…. সেটা ওর গানে রিফ্লেক্ট করে।’ ততক্ষণে মঞ্চ থেকে ছুটটে এসে রথীজিৎ স্যারকে জড়িয়ে ধরেছে আরাত্রিকা। গুরু-শিষ্যর এই আবেগঘন মুহূর্ত দাগ কেটেছে নেটিজেনদের মনেও।