সারেগামাপা-র চলতি সিজনে শুরু থেকেই দর্শক এবং বিচারকদের মন জয় করে এসেছেন শিটং দার্জিলিং-এর ছেলে দিবাকর। অ্যালবার্ট কাবোর পর আবারও দিবাকরের পাহাড়ি সুরে মন ভিজেছে গোটা বাংলার। চলতি সপ্তাহ দিবাকর ফের একবার নিজেকে প্রমাণ করল। আরও পড়ুন-ঐশীর এলিমিনেশন কামনা অঙ্কনা ভক্তের! যেভাবে ‘বন্ধু’র পাশে দাঁড়ালো ঘাটালের শিসপ্রিয়া
নব্বইয়ের দশককে ট্রিবিউট জানিয়ে শনিবার শান্তনু-অন্তরার টিমের দিবাকর গাইল ‘বস ইতনা সা খাওয়াব হ্যায়…’। বাঙালি গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের গাওয়া এক আইকনিক গান, শাহরুখের লিপে ইয়েস বস ছবির এই গান ঝড় তুলেছিল হৃদয়ে। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন দিবাকর। জিতে নিলেন গোল্ডেন গিটার, স্ট্যান্ডিং ওভেশন। রথীজিৎ স্যার তো বলেই ফেললেন, ‘অভিজিৎদা-র পর এই গানটা দিবাকরই বোধহয় সবচেয়ে ভালো গাইল’।
এত প্রশংসা, উচ্ছ্বাস, করতালির মাঝেই সামনে এল এক কঠিন সত্যি। ছোট থেকেই এক কঠিন রোগে আক্রান্ত দিবাকর। পারফরম্যান্স শেষে সঞ্চালক আবির বলেন, ‘আমরা জানি, দিবাকরের ছোট থেকেই চোখের একটা সমস্যা ছিল। সেটা নিয়ে ইচ্ছে করে আমরা বেশি কথা বলতে চাই না, কারণ দিবাকর নিজেই চায়নি। কারণ ও চেয়েছে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে, গান দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছাক। আজ পর্যন্ত কোনওদিন ওর সমস্য়াটা ওর পারফরম্যান্সের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। সেটা আমাদের অনেককিছু শেখায়, প্রত্যেককে’।
আবির আরও বলেন, ‘ওর মূল যে সমস্যা, ও চোখে আলোটা নিতে পারে না। ওর সমস্যা হয়, ও দেখতে পায় না। এই ঝকমকে সেট, এখানে এত আলো, তা সত্ত্বেও ও আমাদের কোনওদিন ওর সমস্যা বুঝতে দেয়নি’।
এরপর খানিক নীচু গলায় দিবাকর বলে উঠেন, ‘হ্যাঁ, প্রবলেম তো হয়। কালোর উপর কোনও জিনিস ফিগার আউট করতে সমস্যা হয়, এটা এক ধরণের ক্যাটারক্ট (ছানি)। কিন্তু আমি সেটা নিয়ে বিশেষ ভাবি না। কারণ কথায় আছে না ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্য। আমার চোখে দেখতে সমস্যা আছে ঠিকই, কিন্তু আমার কণ্ঠ ঠিক আছে, হাত ঠিক আছে। আমি গাইতে পারি, গিটার বাজাতে পারি, সেটাই কম কী!’
দিবাকরের এই প্রাণবন্ত কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেন সকলে। না-পাওয়াগুলো ভুলে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। তা ফের শেখালেন দিবাকর। এই সপ্তাহে গোল্ডেন গিটার পেয়ে ফের প্যারফরম্যার অফ দ্য ডে জিতে নিয়েছেন দিবাকর। ওদিকে সবচেয়ে কম নম্বর পেয়ে ডেঞ্জার জোনে রয়েছেন যুগল। এই সপ্তাহে কি তবে যুগল বাদ পড়বেন? খোলসা হবে রবিবার রাতের এপিসোডে।