গতকাল গোটা দিন ধরে ফেসবুকের একটি মিম ভিডিও প্রায় সকলেই শেয়ার করেছেন নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে সুন্দরবনের এক মহিলার বাঘের সঙ্গে লড়াই করে স্বামীর প্রাণ বাঁচানোর গল্পকে ‘দিদি নম্বর ১’-র TRP বাড়ানোর পাথেয় মনে করেছেন কেউ কেউ। ফেসবুকের একটি পেজ থেকে প্রথম আপলোড করা হয় সেই মিম ভিডিওটি। যা শেয়ার করে রসিকতায় মজতে দেখা গিয়েছে অনেককেই।
সুন্দরবনের মানুষদের বাঘ, সাপ, কুমিরের সঙ্গে লড়াইয়ের গল্প যদিও কারওরই আজানা নয়! প্রতিবছর প্রচুর মানুষ প্রাণ হারান, কেউ বা প্রাণে বাঁচলেও পঙ্গু হয়ে যান। সেরকমই এক পরিবার এসেছিল জি বাংলার এই গেম শোয়ে। জ্যোৎস্না শী নামে ওই মহিলার জামাইকে বাঘে নিয়ে গিয়েছে কিছু বছর আগে। তারপর থেকে মেয়ে ও ৬ মাসের নাতনি তাঁদের ঘরেই। পেটের জ্বালায় ফের তাঁরা বের হন মাছ-কাঁকড়া ধরতে। আর তখনই তাঁর বরের ওপর পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ।
স্বামীকে বাঁচাতে পারলেও তাঁর বাঁ হাতটি চিরতরে অকেজো হয়ে গিয়েছে। এতই অবশ যে নড়াতে পারেন না। এমনকী ‘জামায় হাত ঢোকানো নেই কেন’ নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিল সকলে, সেটাও সম্ভব হয় না ওই মানুষটির পক্ষে! ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ওই হাত কেটে বাদ দিতে হবে। পুরোপুরি সারতে সময় লাগবে আরও এক বছরের বেশি।
‘দিদি নম্বর ১’র প্রোমোতে এক ঝলক দেখানো হয়েছিল সেই গল্পের। আর পুরোটা না জেনেই মিম বানানো শুরু হয়। বিরূপ মন্তব্যের ঢল নেমে। ‘অসহায়’, ‘না-খেতে’ পাওয়া ওই পরিবারকে নিয়েও তাচ্ছিল্য কম হয়নি। TRP বাড়াতে মিথ্যে গল্প বলছে, এরকম দাবি করতে থাকে কেউ কেউ।
তারপরেই চ্যানেলের তরফে সামনে আনা হয়েছে গোটা ভিডিও। যেখানে জ্যোৎস্নাদেবী তাঁর সারা জীবনের লড়াই তুলে ধরেছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। জানিয়েছেন, জামাই মরে যাওয়ার পর মেয়ে আর নাতনিকে ফেরত নেয়নি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাড়িতে থাকা সবার দায়িত্ব এখন তাঁর কাঁধে। মেয়ে চায় আবার পড়াশোনা করতে, নাতনিরও সামনে পড়ে আছে গোটা জীবন, এদিকে স্বামীর এই অবস্থা! অসহায় জ্যোৎস্না জানান, ‘মৃত্যু ছাড়া আমার আর গতি নেই’!
জ্যোৎস্নার লড়াইকে কুর্নিশ জানিতে দেখা গিয়েছে রচনাকে। অভিনেত্রী জানান, ‘জীবন মানেই তো লড়াই। এতদিন লড়াই করে এসেছো, পরেও হয়তো তোমাকে করতে হবে। তবে আমার জি বাংলার দিদি নম্বর ১-র টিম সবসময় তোমার পাশে আছে।’