করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতায় সকলেই ভীত। খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে এই সংক্রমণ। আবার এ সময় যে স্থানকে নিরাপদ মনে করছেন, সেখান থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পারতে পারে। পরিবারের কোনও সদস্য বাইরে গেলে তাঁর গাফিলতির কারণে পুরো পরিবারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে সিডিসি-র তরফে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, যার সাহায্যে ব্যক্তি নিজেকে এবং পরিবারকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে নিরাপদে রাখতে পারবে।
সঠিক ভাবে মাস্ক পরুন- বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় অবশ্যই মাস্ক পরুন। সবচেয়ে জরুরি— সঠিক ভাবে মাস্ক পরতে হবে। অনেকেই নাকের নীচে মাস্ক পরেন। কেউ কেউ আবার থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখেন। মাস্ক দিয়ে যাতে নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢাকা থাকে, সে দিকে লক্ষ্য রাখুন। মুখে ফিট হয়ে বসে থাকবে মাস্ক। তবে শ্বাসপ্রশ্বাসে যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সে বিষয়টিও সুনিশ্চিত করতে হবে। কাপড়ের মাস্ক পরে থাকলে, তা প্রতিবারের ব্যবহারের পর ধুয়ে নেবেন।
মেনে চলুন ৬ ফুটের দূরত্ব- অন্য ব্যক্তির থেকে অন্তত পক্ষে ৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। মনে রাখবেন, কোনও অ্যাসিম্পটোম্যাটিক ব্যক্তিও করোনা ছড়াতে পারে। তাই ভিড়ে যাবেন না, বিশেষত এমন কোনও স্থানে যেখানে ভেন্টিলেশন না-থাকে।
সঠিক ভাবে হাত ধুতে ভুলবেন না- সাবান ও জল দিয়ে ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত নিজের হাত ধোবেন। তা সম্ভব না-হলে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল যুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা উচিত। হাত পরিষ্কার না-করা পর্যন্ত চোখ, নাক ও মুখে হাত দেবেন না।
কাশি বা হাঁচির সময় মুখ ঢাকুন- মাস্ক পরে থাকা অবস্থায় কাশি বা হাঁচি এলে, নিজের মাস্ক খুলবেন না। কাশির পর সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক পাল্টে ফেলুন। এর পর ভালো ভাবে হাত ধুয়ে নিন। মাস্ক পরে না-থাকলে কাশি বা হাঁচির সময় টিস্যু দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে নিন অথবা নিজের কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে কাশুন। ব্যবহৃত টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া উচিত।
বাড়ির নানান আসবাব পরিষ্কার করুন- প্রতিদিন যে সমস্ত আসবাব ব্যবহার করেন, তা নিয়মিত পরিষ্কার করুন। মেঝে, দরজার হাতল, সুইচ বোর্ড, কাউন্টারটপ, ডেস্ক, ফোন, কি-বোর্ড, টয়লেট, জলের কল, সিঙ্ক ইত্যাদি। ডিসইনফেকটেন্টের সাহায্যে এগুলি পরিষ্কার করতে পারেন।
বাড়ি এসে সঙ্গে সঙ্গে স্নান করুন- অফিস বা কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর সঙ্গে সঙ্গে স্নান করে নিন। স্নান না-করা পর্যন্ত কোনও কিছু স্পর্শ করবেন না। স্নান করতে না-পারলে হাত-পা, মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে কাপড় পাল্টে ফেলতে হবে।
বয়স্ক ও বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকুন- কাজের কারণে বাইরে যাতায়াত করলে বাড়ির বয়স্ক ও ছোট সদস্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
খাবার ভাগ করে খাবেন না- বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের খাবার থালা, বাটি, চামচ, গ্লাস পৃথক পৃথক থাকা উচিত। কেউ কারও এঁটো খাবার খাবেন না এমনকি খাবার ভাগ করেও খাবেন না।
হেল্থ মনিটর করতে থাকুন- বাড়ির প্রতিটি সদস্য নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন থাকুন। জ্বর, কফ, শ্বাসকষ্ট বা করোনার অন্য কোনও লক্ষণ দেখা দিলে সাবধান হয়ে যান। নিজেকে আইসোলেট করে দিন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বিলম্ব করবেন না।
তাপমাত্রা চেক করুন- কোনও শারীরিক সমস্যা অনুভব করলে সবার আগে নিজের তাপমাত্রা অবশ্যই চেক করবেন। ব্যায়াম করা পর ৩০ মিনিট পর্যন্ত এবং জ্বরের ওষুধ খাওয়ার পর তাপমাত্রা চেক করবেন না। জ্বর-সহ অন্য কোনও লক্ষণ দেখা দিলে করোনা টেস্ট করিয়ে নেবেন।