রণবীর ভট্টাচার্য
শুধু বাংলা বা দেশেরই নয়, সারা পৃথিবীর কাছেই বেলুড় মঠ এক অতি পরিচিত এবং সম্মাননীয় এক প্রতিষ্ঠান। রবিবার, অর্থাৎ ১ মে প্রতিষ্ঠানের জন্মদিন। ১২৫ বছর পেরিয়ে এল এই মঠ। জেনে নিন, মঠ সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা তথ্য।
১৮৯৭ সালে ১ মে স্বামী বিবেকানন্দ বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে ১৬ জন সদস্যদের নিয়ে সভা করেন। সেখানেই রামকৃষ্ণ মিশনের বীজ বপন হয়েছিল। ৫ মে সংঘের নামকরণ হয় রামকৃষ্ণ মিশন অ্যাসোসিয়েশন। ১৯০৯ সালে আইনি স্বীকৃতি ও সিলমোহর পায় রামকৃষ্ণ মঠ। ঠাকুরের আদর্শ ও ঈশ্বর-ভাবনা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বামীজি। আজকের দিনটি তাই সামগ্রিক ভাবে ভারতের কাছে গৌরবের ও গর্বের।
এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে রাম কৃষ্ণ মিশন। ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বে জুড়ে রামকৃষ্ণ মিশন এবং রামকৃষ্ণ মঠের ২২১টি সেন্টার গড়ে উঠেছে।
রামকৃষ্ণ মিশনের সেন্টারের মধ্যে ১৬৭টি ভারতে, ১৫টি বাংলাদেশে, ১৪টি আমেরিকায়, ২টি করে ব্রাজিল, কানাডা, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং একটি করে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়া, মরিশাস, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সুইজারল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং জামবিয়াতে।
ভারতে ২১টি সাব-সেন্টার এবং দেশের বাইরে ২৩টি সাব-সেন্টার রয়েছে। পৃথিবী জুড়ে মোট ৭৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের যেখানে দুই লক্ষের বেশি বিদ্যার্থী যুক্ত রয়েছে।
দেশের বাইরে রামকৃষ্ণ মিশনের বেদান্ত সোসাইটি বা বেদান্ত সেন্টারগুলো কাজ করে চলেছে, যেখানে বেদান্ত নিয়ে শিক্ষা তো রয়েছেই, তার সঙ্গে আধ্যাত্মিকতা নিয়েও চর্চা হয়ে চলেছে।
১২৫ বছর উপলক্ষ্যে বেলুড় মঠের পক্ষ থেকে বছরভর অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আজ সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ভক্ত সমাগম হবে এবং মহারাজ ও ব্রহ্মচারীদের নেতৃত্বে অনেক অনুষ্ঠান হবে।
রামকৃষ্ণ মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী শ্রী স্মরণানন্দ মহারাজ পৌরহিত্য করবেন বিকেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের যার সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ইউটিউবে।
১২৫ বছর উপলক্ষে একটি বই প্রকাশ হবে এ দিনের অনুষ্ঠানে। দিনের শেষে একটি মার্গ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হবে যেখানে স্বামী কৃপাকারনন্দ যোগদান করবেন।
সমাজের শোষিত, পীড়িত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন স্বামীজি। সেই লক্ষ্যেই তৈরি হয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন।
এখনও রামকৃষ্ণ মিশন ১২৫ বছর আগের আদর্শ নিয়েই এগিয়ে চলেছে। শিক্ষাকে স্বামীজি দিয়েছিলেন সর্বাধিক অগ্রাধিকার। তাঁরই প্রদর্শিত পথে আর ঠাকুরের আদর্শকে মূলমন্ত্র করে সামনের দিনে এগিয়ে যাচ্ছে রামকৃষ্ণ মিশন।