১৬৭৭ সালে ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী রবার্ট প্লট প্রথম বার ডাইনোসরের হাড় খুঁজে পান। যদিও তখন এই প্রাণীটি সম্পর্কে কোনও ধারণা ছিল না। পরে আর এক ব্রিটিশ জীবাশ্মবিদ উইলিয়াম বাকল্যান্ড সেই হাড় থেকেই ডাইনোসরের সন্ধান পান। সেটি ১৮১৯ সাল। তার পরে প্রায় ২০০ বছর কেটে গিয়েছে। গোড়ার দিকে বহু বছর পরে পরে এক আধটি করে নতুন জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া যেত। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে ডাইনোসরের নানা প্রজাতির অস্তিত্বের কথা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানের উন্নতি, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধানও বেড়েছে। হালে প্রতি বছর ক’টি করে নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্মের আবিষ্কার হচ্ছে, তা শুনলে চোখ কপালে উঠবে। চলতি বছরে ৪৩টি নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মজার কথা, এর আগের বছরগুলির তুলনায় এই সংখ্যাটিও কম। ২০০৩ সাল থেকে প্রতি বছরই ৪৫টি করে নতুন ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে সংখ্যাটি যে শুধু সাধারণ মানুষকেই হতবাক করছে— এমনটা নয়। এই সংখ্যা দেখে হতবাক বিজ্ঞানীরাও। অনেকেই এটিকে ‘বিস্ময়কর’ বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যায় নতুন নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়ার কারণ কী? বিজ্ঞানীরা বলছেন, মূলত প্রযুক্তির উন্নতি। এখন পাথর ফাটিয়ে, মাটি খুঁড়ে অনেক সহজেই জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া যায়। আগে দু’টি আলাদা আলাদা জীবাশ্ম একই প্রজাতির, নাকি আলাদা গোত্রের ডাইনোসরের, তা বুঝতেও সমস্যা হত। এখন সেটি বোঝাও সহজ হয়ে গিয়েছে। ফলে বেড়েছে নতুন প্রজাতির চিহ্নিতকরণের সংখ্যা।
গত কয়েক বছরে চিন এবং আর্জেন্টিনায় বেশ কয়েকটি প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। এ বছর অস্ট্রেলিয়ায় একটি বিরাট আকারের ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তরফে এ বছরের তিনটি আবিষ্কারকে ডাইনোসর-বিদ্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করা হয়েছে। এই তিনটি হল:
স্পিসোমেলাস আফের: মরোক্কোয় এই প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। এদের গায়ে বর্মের মতো আস্তরণ ছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যাংকিলোসর নামের ডাইনোসর গোত্রের মধ্যেই এটিকে ফেলছেন তাঁরা।
অস্ট্রেলোটিটান কুপারেনসিস: অস্ট্রেলিয়ার ভূখণ্ডে এর চেয়ে বড় কোনও প্রাণী কখনও ছিল না বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আয়তনে বাস্কেটবল কোর্টের চেয়েও বড় ছিল এটি— মত বিজ্ঞানীদের।
টিলাটোলোফাস গ্যালোরাম: বিরাট মাপের তৃণভোজী ডাইনোসর। মেক্সিকোর দক্ষিণ দিকে এটির জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।