৫৪তম বছরে পড়ছে আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের পুজো। ‘আকারের মহাযাত্রা’ এই বছর এই পুজোর ভাবনা। যদিও দেবীমূর্তি ঝলক দেখা গেলেও, সে বিষয়ে এখনও এই পুজোর সোশ্যাল মিডিয়া পেজ থেকে বিশেষ কিছু জানা যায়নি। কিন্তু যা জানা গিয়েছে, তা হল— এবারের পুজোর সঙ্গে সম্পৃক্ত এক শিল্পভাবনার কথা। বাঙালির উৎসবে বাংলার আলপনা, যা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক লোকশিল্প, তাকেই ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে এবারের উৎসবে।
(আরও পড়ুন: ছেলেরা পুজোয় মেনে চলুন এই ফ্যাশন টিপস, মেয়েদের নজর থাকবে শুধু আপনারই উপর)
এবারের আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের পুজোর মণ্ডপ, সাবেকি এবং আধুনিক ভাবনার মেলবন্ধনে সেজে উঠছে। সাজাচ্ছেন সুধীরঞ্জন মুখোপাধ্যায়। তিনি এবং তাঁর পরিচিতরা মিলে এই মণ্ডপের আলপনার দায়িত্ব নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আরও কেউ এই কাজ শিখতে এবং কাজে আগ্রহী হলে, তাঁদেরও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে এই পুজোয়।
(আরও পড়ুন: নবমীর ধুনুচি নাচে পাড়া কাঁপাতে চান? এই ছোট্ট টিপস খেয়াল রাখলেই কেল্লাফতে!)
আলপনা বাংলার অতি প্রাচীন এক শিল্প। এটি সৃষ্টির পিছনে বহুবিধ কারণের একটি যেমন ছিল নানা ধর্মীয় আচার, তেমনই পরবর্তী কালে এই আলপনাই স্বতন্ত্র এক শিল্প হয়ে ওঠে। আরও পরে আবার শান্তিনিকেতনের শিল্পচর্চায় ঢুকে পড়ে বাঙালির এই আলপনা। একদিকে নান্দনিকতাকে ছুঁয়ে যাওয়া, অন্যদিকে বাংলার আলপনা শিল্পের ইতিহাস ও বিবর্তনকে সীমিত পরিসরে ধরে রাখার উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে এবারের দুর্গা পুজোয় আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের মণ্ডপে।
(আরও পড়ুন: বিজয়া দশমীতে বানিয়ে ফেলুন আঙুর দিয়ে মিষ্টি, খুবই সহজ এই রেসিপি)
শান্তিনিকতনে এক সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে আলপনা শিল্প শিক্ষার শুরু। পরে তিনি সুকুমারী দেবীকে আমন্ত্রণ জানান, কলাভবনে এই শিল্প ছাত্রছাত্রীদের শেখানোর জন্য। সুকুমারী দেবী পরে নিজস্ব ঘরানা তৈরি করেন এই শিল্পের। অন্যদিকে আবার কৃষ্ণমোহন সেন বাংলার আদি আলপনা শিল্পের কায়দাকে নিয়ে যান কলাভবনে। আর শেষে যাঁর কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন নন্দলাল বসু। যিনি কলাভবনের অধ্যক্ষ থাকার সময়ে আলপনা শিল্পকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেন। সব মিলিয়ে বাংলার আধুনিক শিল্পকলায় আলপনার যে স্থান, তার অনেকটাই রক্ষিত হয়েছে শান্তিনিকেতনের কারণে। আর সেই শিল্পকলার ধাপে ধাপে বিবর্তনকে ধরার চেষ্টা হচ্ছে আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের পুজোয়।