পরিবার, আত্মীয় আমরা জন্মসূত্রে পেয়ে থাকি। এক্ষেত্রে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বাছার সুযোগ থাকে না। তবে বন্ধুরা হচ্ছে এমন পরিবার যাঁদের আমরা নিজেরা পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিই। যাঁদের সঙ্গে আমরা জীবনের অনেক কিছুই ভাগ করে নিই। বন্ধু মানে কেবল বন্ধু নয়, তাঁরা অনেক সময় পরিবার হয়ে ওঠে, পার্টনার হয়, এবং আরও অনেক কিছুই। ফলে যে সম্পর্কটা আমাদের কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ এতটা জড়িয়ে থাকে সেটা যদি খারাপ হয় তার কুপ্রভাব কিন্তু সরাসরি আমাদের জীবনে পড়বে।
খারাপ বন্ধুর পাল্লায় পড়লে বা খারাপ বন্ধুত্বের সম্পর্কে থাকলে তা আমাদের মানসিক শান্তি বিঘ্নিত করে। জীবনের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। তাই যাঁকে আপনি বন্ধু ভাবছেন সে আদৌ আপনার বন্ধু কিনা সেটা জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কিংবা সে আপনার জন্য ভালো না খারাপ সেটাও যাচাই করা প্রয়োজন।
কিন্তু কী করে বুঝবেন সেই বন্ধু সঠিক কি না? দেখে নিন।
তাঁরা আপনাকে ‘স্পেস’ দেবে না: আপনি কী চাইছেন সেটা তাঁর কাছে কখনও গুরুত্ব পাবে না। তিনি সব সময় নিজের যেটা ইচ্ছে সেটাই করবেন। কাছের বন্ধু বলেই তিনি আপনার কোনও ব্যক্তিগত স্পেস থাকতে পারে সেটা মানতে চাইবেন না। অথচ প্রতিটা সম্পর্কেই কিন্তু এই স্পেস খুব জরুরি। সেটা যদি তিনি আপনাকে না দেন, তাহলে বুঝবেন তিনি সঠিক বন্ধু নন আপনার। ধরা যাক, আপনি একদিন ছুটি পেয়েছেন এবং সেদিন একটু বিশ্রাম করতে চাইছেন কোনও কারণে। সবটা জানার পরও তিনি আপনাকে যদি জোর করবেন বাইরে যাওয়ার জন্য তাহলে বুঝবেন এটা একটা লক্ষণ খারাপ বন্ধুত্বের!
সে আপনার যথাযথ কেয়ার নেবে না: আপনি কী বলছেন, কী চাইছেন সেসব তাঁর কাছে গুরুত্ব পাবে না। এর ফলে আপনার বারবার অসম্মানিতবোধ হতে পারে। মনে হতে পারে সে আপনার কেয়ার করে না। আপনি কী বলতে চাইছেন সে শুনতে চাইছে না। যদি এটা হয়, তাহলে সতর্ক হন।
ক্ষমা চাওয়া: সব সম্পর্কেই ছোটখাটো সমস্যা হয়। কিন্তু সে যদি কোনও ভুল করার পর সঠিক ভাবে ক্ষমা না চায়, উল্টে আপনাকে আঘাত দেয় তাহলে বুঝবেন সেই বন্ধু আপনার জন্য ঠিক নয়। এছাড়া কোনও ঝামেলা হলেই যদি বারবার আপনাকেই ক্ষমা চাইতে হয়, বা সব মিটমাট করতে হয় তাহলে সরে আসুন সেই সম্পর্ক থেকে।
আপনি অন্য কারও সঙ্গে সময় কাটালে সে আপনাকে অপরাধীবোধ করাবে: আপনার বন্ধু যদি আপনাকে আঘাত দেয় অন্য কারও সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন বা ঘুরতে গেছেন বলে তাহলে বুঝবেন এটা কিন্তু একটি লক্ষণ খারাপ বন্ধুত্বের। কারণ সেই বন্ধু ছাড়াও আপনার জীবনে অনেক মানুষ আছেন যাঁদের সময় দেওয়া প্রয়োজন, যে এটা বোঝে না তাঁকে জীবনে না রাখাই ভালো। আপনার সবটুকু সময় সেই বন্ধুর কেবল এমনটা যে ভাবে সে ঠিক নয়।
আপনাকে বদলাতে চায় যে: যে বন্ধু আপনাকে আপনার কমফোর্ট জোন থেকে বের করে বদলাতে চায় নিজের পছন্দ অনুযায়ী, সে ঠিক মানুষ নয় আপনার জন্য। আপনার কথা বলার ধরন, পোশাক পছন্দ, ইত্যাদি সে চাইবে তাঁর নিজের মতো করে বদলে নিতে। এক্ষেত্রে আপনার পছন্দ বা অসুবিধা মোটেই গুরুত্ব পাবে না। যদি আপনি এমন কিছুর সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে সতর্ক হন।
আপনাকে মূল্য দেবে না: যে বন্ধু আপনার প্রশংসা করে না ভালো কাজের জন্য, আপনার উন্নতি দেখে গর্ব করে না সে কিন্তু আদতে আপনাকে হিংসে করে। তাই যে মানুষ আপনার ভালোতে খুশির হওয়ার বদলে হিংসে করে সে কখনই আপনার জন্য ঠিক নয়।