যে দিনের কথা ইতিহাসের পাতায় সযত্নে তোলা, সে দিনটিকে চাক্ষুষ করেছিলেন তিনি। পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাধীন ভারতের প্রথম সূর্যোদয় দেখেছিলেন বিস্ময় ভরা চোখে। অবশ্য তখন তিনি নেহাতই বালক। বয়স মেরেকেটে সাত বা আট। ওই কাঁচা বয়সে 'স্বাধীনতা'র অর্থও ছিল অজানা। দেশ স্বাধীন হওয়ার তাৎপর্য বুঝে ওঠারই বা ক্ষমতা কোথায়! শুধু অবাক হয়ে দেখেছিলেন সকলের উচ্ছ্বাস, আনন্দ। এর পর সময় গড়িয়েছে। পেরিয়েছে সাতটি দশক। বর্ষীয়ান অভিনেতার মনে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের স্মৃতি আজও অমলিন।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে পরান বলেন, 'সেই দিন চারদিকে যেন একটা উৎসবের আমেজ। এত বড় একটা বিষয়! আনন্দের ঢেউ উঠেছিল। তখন আমি খুবই ছোট। তাই আলাদা করে কোনও অনুভূতি কাজ করেনি। তবে সবার আনন্দ দেখেছিলাম।'
(আরও পড়ুন: রাস্তার ধারে পড়ে থাকে ‘বেনামী’ বিপ্লবীর দেহ, পাশ দিয়ে উড়ে যায় ইতিহাসের ছেঁড়া পাতা: রাজা সেন)
শৈশবে কেমন ভাবে পালন করতেন স্বাধীনতা দিবস? পরান বললেন, 'একটু বড় হতেই বন্ধুদের সঙ্গে প্যারেড করতে যেতাম। ড্রাম বাজাতাম। পাড়ার ক্লাব থেকে আয়োজন করা হত। সবাই মিলে কত তোড়জোড়! তাতেও একটা অন্য রকম অনুভূতি কাজ করত। সরাসরি সে ভাবে কোনও কাজ না করলেও বড়দের সঙ্গে থাকতাম। তাতেই আমরা খুশি।'
(আরও পড়ুন: প্রথম স্বাধীনতা দিবস ভাবতে বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে উঁকি দেয় নেতাজির রবার স্ট্যাম্প: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়)
পরানের জন্ম বেলেঘাটায়। বেড়ে উঠেছেন কলকাতাতেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শহর জোড়া উচ্ছ্বাসের সেই ছবি তাঁর আজও মনে আছে। বয়স কম হওয়ায় তখন খুব বেশি দূর যাওয়ার অনুমতি ছিল না। গুটিগুটি পায়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখে নিয়েছিলেন চারপাশের উদযাপন। তাঁর কথায়, 'সব মিলিয়ে সেই দিনটাই ছিল উৎসবের।'
সেই ছোট্ট বালক আজ টলিউডের প্রৌঢ় অভিনেতা। স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড, বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড়— এ সবই এখন স্মৃতি। যে স্মৃতি আজও উজ্জ্বল তাঁর মননে।