ডায়াবিটিস রোগের বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য পেল চিনের একদল বিজ্ঞানীরা। বিশ্বে প্রথমবারের জন্য তারা সেল থেরাপি ব্যবহার করে ডায়াবিটিস আক্রান্ত ব্যক্তিকে পুরোপুরি সুস্থ করে তুলেছেন, এমনই খবর প্রতিবেদন সূত্রে। ৫৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে তার একটি কিডনিও প্রতিস্থাপন করা হয়, এরপরেও তিনি তার অগ্নাশয়ের আইলেটের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন, যার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এর ফলে জীবনের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিলেন। প্রত্যেকদিন একাধিক ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হতো তাকে। এমনই এক ব্যক্তিকে সুস্থ করে তুললেন চিনা চিকিৎসক দল।
গবেষক ইয়িন হাও বলেন, 'এই রোগী ২০২১ সালের জুলাই মাসে ইনোভেটিভ সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট পরিষেবা পেয়েছিলেন। প্রতিস্থাপনের ১১ সপ্তাহ পর ওই ব্যক্তি ইনসুলিন ইঞ্জেকশন থেকে মুক্তি পান। এই সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধের ডোজও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হয়েছিল। এর এক বছর পরে ওরাল ওষুধও সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে ওই রোগী অগ্ন্যাশয় আইলেটের কার্যক্ষমতাও পুরোপুরি ফিরে পেয়েছেন। বর্তমানে ওই রোগী ৩৩ মাসের জন্য ইনসুলিন নেওয়া বন্ধ রেখেছেন, এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসক দল। ১৯৮০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ডায়াবিটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১১ কোটি থেকে বেড়ে ৪২ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষ টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
সাংহাই চ্যাংজেং হাসপাতাল, চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সের অধীনে সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন মোলিকিউলার সেল সায়েন্স এবং সাংহাইভিত্তিক রেনজি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং গবেষকরা এক নজির স্থাপন করলেন ডায়াবিটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে। সেল থেরাপির মাধ্যমে ডায়াবিটিস বিরুদ্ধে পাওয়া এই সাফল্য গত ৩০ এপ্রিল সেল ডিসকভারি জার্নালে প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিমোথি কিফার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি মনে করি এই গবেষণাটি ডায়াবিটিসের জন্য সেল থেরাপির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।’ আগামী এই চিকিৎসা আরও ডায়াবিটিস আক্রান্ত মানুষের কতটা কাজে লাগে, সেটাই এখন দেখার।