চিনে আবার নতুন করে ব্যাপক আকার নিচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। এবার আর পুরনো করোনা নয়, এভার সেখানে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হয়েছে ওমিক্রনের একটি উপরূপ BF.7-কে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এর পরে করোনা আরও ভয়ঙ্কর আকার নেবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এবং বেশ কয়েকটি রূপ এবং উপরূপ মিলিত হয়ে নতুন একটি রূপের জন্ম দেবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।
সম্প্রতি জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক এবং সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টুয়ার্ট ক্যাম্পবেল রে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁর আশঙ্কার কথা। বলেছেন, ‘চিনের জনসংখ্যা বিরাট। তার মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানকার মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বেশ কম। আর এটিই করোনার নতুন রূপের জন্ম দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
তাঁর মতে, চিনের জনসংখ্যা বিরাট হওয়া এবং মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম হওয়াটাই একটি নতুন করোনার জন্ম হওয়ার আদর্শ জায়গা। ‘প্রথমেই আবার একটি ঢেউ আসতে পারে। আর তার পিছন পিছন আসতে পারে করোনার নতুন রূপ’, এমনই জানিয়েছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টুয়ার্ট ক্যাম্পবেল রে।
এর আগে চিন থেকেই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল করোনাভাইরাস। তার পরে সেটির ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই তার পিছন পিছন এসে হাজির হয় ডেল্টা এবং ওমিক্রন। এই দুই করোনার ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাকি পৃথিবী।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টুয়ার্ট ক্যাম্পবেল রের সুরেই কথা বলছেন শান-লু লিউ। তিনি ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক। তাঁ মতে আগামী দিনে পরিস্থিতি খারাপ হওয়া যে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে চিনের বর্তমান পরিস্থিতি। কারণ এই নতুন করোনা, অর্থাৎ ওমিক্রন BF.7 ব্যাপক ঝামেলায় ফেলতে পারে সকলকেই।
শান-লু লিউয়ের মতে, নতুন এই করোনা সহজেই রোগ প্রতিরোধ বর্মকে ভেদ করতে পারে। এটি সহজেই টিকার থেকে পাওয়া রোগ প্রতিরোধ শক্তিকেও ভেঙে দিতে পারে। ফলে এটি এত মারাত্মক হয়ে উঠেছে, চিন থেকে অন্য দেশে এটি ছড়াতে পারে যে কোনও সময়ে। আর তাহলেই এটি বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে।
তাঁর কথায়, স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি, টিকা থেকে পাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং একবার করোনা সংক্রমণ হয়ে যাওয়ার ফলে তা থেকে পাওয়া রোগ প্রতিরোধ শক্তি— এই তিনটি কারণে গত ৬ মাস থেকে এক বছরে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে এই নতুন করোনার বিরুদ্ধে সেই রোগ প্রতিরোধ কাজ করবে না, সেটি নিয়েই সন্দেহ রয়েছে।