সম্প্রতি ইকুয়েডরের জঙ্গলে ট্রেক করতে গিয়েছিলেন সে দেশের প্রাণীবিদ দিয়েগো বাতালাস। হঠাৎ শুনতে পেলেন কিচিরমিচির ডাক। কৌতূহলের কারণেই সেই আওয়াজের উৎসের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রথমটায় মনে হয়েছিল, বিশেষ ধরনের ঝিঁঝিপোকার ডাক বুঝি। আর একটু কাছে এগোতে মনে হল, ঝিঁঝিপোকা নয়, এটা বোধ হয় কোনও পাখির ডাক। কিন্তু যখন একেবারে কাছে পৌঁছোলেন, তখন যা দেখলেন, তাতে বদলে গেল ১০০ বছরের বৈজ্ঞানিক ধারণা।
কী দেখলেন বিজ্ঞানী? যে প্রাণীটিকে এই সুন্দর সুরে তিনি ডাকতে দেখলেন, সেটি একটি ব্যাং। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটির নাম Rhinella festae। ৪৫ থেকে ৬৮ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এটি। এর বৈশিষ্ট্যই হল, এটি পাখির মতো সুন্দর স্বরে ডাকতে পারে। আর সেই কারণেই এই বিশেষ ব্যাংটির জনপ্রিয়তা।
কিন্তু এটিকে নিয়ে এত হইচই কেন?
প্রায় ১০০ বছর ধরে এর অস্তিত্ব টের পাননি জীববিদরা। এটি যে এমন সুন্দর স্বরে ডাকতে পারে, তাও জানা ছিল না অনেকের। দিয়েগো বাতালাস জানিয়েছেন, আসলে এই প্রাণীটির গত ১০০ বছরে কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। শিকার হওয়া থেকে বাঁচতেই এরা খুব গোপনে থাকে। তাই এদের অস্তিত্ব হারিয়ে গিয়েছে বলেই মনে করতেন বিজ্ঞানীরা।
দিয়েগো বাতালাস জানিয়েছেন, এই বিশেষ প্রজাতির ব্যাংটি নিজেদের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদানের মাধ্যম হিসাবে এই আওয়াজটি ব্যবহার করে। কিন্তু সেটিও খুব কম। ভাগ্যিস তিনি নিজে সেই সময়ে জঙ্গলে ছিলেন বলে, এটি টের পাওয়া গেল। নাহলে প্রাণীবিদ্যার ইতিহাসের পাতাতেই শুধু থেকে যেত এই বিশেষ প্রাণীটি।