এই প্রথমবার দেশ জুড়ে এমন একটা সমীক্ষা করা হল যেখানে ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং তার সঙ্গে জড়িত একাধিক জিনিসের উত্তর পাওয়া গেল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী ৮১ শতাংশ ছাত্রই শিক্ষা, পরীক্ষা এবং তার ফলাফলের কারণেই সব থেকে বেশি উদ্বেগে ভোগে। ৬ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার এমনই এক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। আর এই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে উদ্বেগ।
কেন্দ্রীয় সরকারের মনদর্পন বিভাগ এই সমীক্ষাটি করেছিল। এনসিইআরটির সাহায্যে এই বিভাগ বিভিন্ন স্তরের ছাত্র ছাত্রীদের মানসিক ভাবে সাহায্য করে থাকে। এই সমীক্ষায় ৩,৭০,০১৩ জন ছাত্র ছাত্রীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল যারা ক্লাস ৬ থেকে ১২ এর মধ্যে পড়ে। এদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল, মিডিল স্টেজ এবং সেকেন্ডারি স্টেজ। ৫০ শতাংশের মধ্যে দেখা গিয়েছে যে পড়াশোনার কারণে তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়, ৩১ শতাংশের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় পরীক্ষা এবং তার ফল। আর এই উদ্বেগ মিডিল স্টেজের থেকে সেকেন্ডারি স্টেজে বেশি দেখা গিয়েছে। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে উদ্বেগ বেশি দেখা যায়।
একাধিক কারণে এই উদ্বেগ তৈরি যার মধ্যে আত্মবিশ্বাস না থাকা হচ্ছে প্রধান কারণ। তারা তাদের পড়াশোনা, প্রস্তুতি নিয়ে অনেক সময়ই সন্তুষ্ট হতে পারে না। এই সমীক্ষায় মূলত এটা তুলে ধরতে চেষ্টা করা হয়েছে যে ছাত্র ছাত্রীদের পারিপার্শ্বিক, সামাজিক, সহ কোন কোন বিষয়গুলো তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
৩৯ শতাংশ ছাত্র ছাত্রী তাদের পড়াশোনা নিয়ে সন্তুষ্ট, কিন্তু যত বয়স বাড়তে থাকে, ক্লাস উঁচু হয় ততই নানান সমস্যা তৈরি হয় এবং তাদের মনে ভয় উদ্বেগ বাসা বাঁধতে থাকে। সেকেন্ডারি স্টেজে ছাত্র ছাত্রীদের মনোসংযোগেরও অভাব ঘটে মিডিল স্টেজের তুলনায়। একই বাড়তে থেকে মুড সুইংয়ের সমস্যা। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শারীরিক কারণে আত্মবিশ্বাস পায় না, ফলে পড়াশোনায় পুরোপুরি মন দিতে পারে না যার কারণে পরীক্ষায় ফল খুব একটা ভালো হয় না।
তাই এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে স্কুল কলেজে যেন শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীদের মানসিক অবস্থার দিকেও সমান ভাবে নজর দেওয়া হোক, তাদের সঠিক বিকাশের পথ করে দেওয়া হয় যেন। ইমোশনাল শিক্ষাও ভীষণ জরুরি এই ক্ষেত্রে। এই সমীক্ষায় মূলত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, জহর নবোদয় বিদ্যালয়, সরকারি স্কুল সহ প্রাইভেট এবং সৈনিক স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের তথ্য নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও এই সমীক্ষায় এটা দেখা গিয়েছে যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ ছাত্রই সমাজে মান-সম্মান পাওয়ার জন্য এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য পড়াশোনায় ভালো ফল করতে চায়।