হালে একের পর এক ঘটনার কারণে আলোচনার কেন্দ্রে কলকাতা। আরজি কররে ঘটনার নিরিখে সারা বিশ্বের কাছেই পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে এই শহর। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই সারা বিশ্বের কাছে এই শহরের পরিচয় হল প্রাচীন সংস্কৃতির শহর, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের শহর বলে। হালে এই শহরের আইনশৃঙ্খলা, এখানকার নানা সমস্যার বিষয় তুলে অনেকেই এটিকে বাসযোগ্য নয় বলে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এসবের মাঝেই কলকাতা সংক্রান্ত একটি তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
কী সেই তথ্য? জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক ট্রাভেল ম্যাগাজিন হল ‘ট্রাভেল প্লাস লেজার’। সেই পত্রিকার তরফে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। জনপ্রিয় এই পত্রিকার পাঠকদের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেখানে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এশিয়ার কোন কোন শহর তাঁদের মতে সেরা? সেই সমীক্ষা যে একেবারে উপরে যে ১৫টি শহরের নাম উঠে এসেছে, সেগুলি প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, সেই তালিকার আট নম্বরে রয়েছে কলকাতা। ভারতের আরও তিনটি শহর রয়েছে এই তালিকায়। মজার কথা তালিকার এক নম্বরেই রয়েছে ভারতেরই একটি শহর— উদয়পুর। কলকাতা আট নম্বরে, জয়পুর নয় নম্বরে আর মুম্বই ১৪ নম্বরে।
এবার প্রশ্ন হল কীসের নিরিখে এই সমীক্ষা। দাবি করা হয়েছে, বেশ কয়েকটি বিষয়ে পর্যটক এবং পাঠকদের প্রশ্ন করা হয়েছিল এই সমীক্ষায়। তার মধ্যে ছিল সহিষ্ণুতা, উদারতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছিল। আর যে বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে বলা হয়, সেটি হল সংস্কৃতি। এই সব ক’টি বিষয়ের নিরিখেই কলকাতা ৮ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে।
(আরও পড়ুন: চিনা পাড়া থেকে মরিশাস, কলকাতার মেয়ে ক্যাথরিনের বিশ্ব জয় হাকা কুইজিন নিয়ে)
এই তথ্য সামনে আমার পর থেকেই একদল মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। অনেকেই বলেছেন, যাঁরা কলকাতাকে নিরাপদ বলে মনে করেন না, এটা তাঁদের জন্য একটি কড়া জবাব। কেউ আবার বলেছেন, কলকাতাকে হেয় করার যে চক্রান্ত চলে আসছে, এটি তাকে ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়েছে।
এর পাশাপাশি আরও একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই সমীক্ষাটি কবে নাগাদ করা? এর কোনও স্পষ্ট জবাব এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। চলতি বছরে গোড়ায় ওই পত্রিকার তরফে এমনই একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছিল। সংবাদমাধ্যমে সেটি তখন প্রকাশিতও হয়। কিন্তু হালের একের পর এক ঘটনার পরে এই সমীক্ষা চালানো না হলে, তার প্রভাবও এতে নেই। ফলে সেই হিসাবে একথা মেনে নিতেও অসুবিধা নেই, যাঁরা দাবি করছেন, ‘এত বিতর্কের পরেও কলকাতা তার সম্মান ঠিকই ধরে রেখেছে’, তাঁদের যুক্তিতে কিছুটা ফাঁকা থাকতে পারে।