সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়া বিমানে সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাবের ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযুক্ত যাত্রী মদ্যপ ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। তারইমধ্যে বিমানে মদ্যপ যাত্রীদের আরও কয়েকটি বেয়াদপির ঘটনা সামনে এসেছে। সেই পরিস্থিতিতে বিমানে মদ পরিবেশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মদ কি শরীরে বাড়তি কোনও প্রভাব ফেলে? বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের সহ্যক্ষমতার বেশি পান করলে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতেই হবে। কারণ মস্তিষ্কের উপর অ্যালকোহলের প্রভাব ভয়ঙ্কর। বেশি পরিমাণে মদ্যপান করলে নিয়ন্ত্রণ হারানো স্বাভাবিক।
কীভাবে মস্তিস্কে প্রভাব ফেলে অ্যালকোহল?
অ্যালকোহল কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা ব্যাখ্যা করে, নিমহান্স (বেঙ্গালুরু) সেন্টার ফর অ্যাডিকশন মেডিসিনের মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক জয়ন্ত মহাদেবন নিউজ ১৮-কে বলেন, অ্যালকোহল একটি নিষ্ক্রিয়কারী (নিউট্রিলাইজিং) এজেন্ট। মদ কতটা পান করছেন, তার উপর নির্ভর করছে কতটা প্রভাব বিস্তার করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত দুই পেগ অ্যালকোহল পান করার পরেই (৬০ মিলিলিটার) ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন। সেবন যত বাড়তে থাকে, ততই অসংলগ্ন আচরণ বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে কথা ঝাপসা হতে থাকে। সোজা হয়ে হাঁটহাঁটি করার ক্ষমতা থাকে না। খুব উচ্চস্তরের নেশা হলে ব্যক্তিটি কোমাতেও চলে যেতে পারেন। এমনকী মৃত্যুও হতে পারে।
তাঁর কথায়, বিমানে থাকা ব্যক্তিটি খুব নেশাগ্রস্ত ছিল। মস্তিষ্কের যে অংশ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, তা হল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স। অ্যালকোহল এই অংশকে প্রভাবিত করে। যার ফলে একজনকে এমন অশালীন আচরণ করতে দেখা যায়। মহাদেবনের কথায়, অ্যালকোহল গামা-অ্যামিনোবিউটারিক অ্যাসিড (GABA) নামের নিউরোট্রান্সমিটারটির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। GABA ঘুমের সঙ্গেও জড়িত। ঘুমের ওষুধগুলিতে প্রায়ই এর মাত্রা বেশি থাকে। ফলে সমস্যা আরও বাড়ে। তাই কতটা পরিমাণ অ্যালকোহল শরীর সহ্য করতে পারছে, তা জেনেবুঝেই এটি পান করা উচিত।