সারা বিশ্বেই অকালে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এর পিছনে অন্যতম কারণ হল বায়ুদূষণ। দিনদিন দূষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষদের এর মাসুল গুনতে হচ্ছে । তবে বিজ্ঞানীরা বললেই তো হল না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভারতী পাওয়ার তেমনটা বলছেন না। এ ব্যাপারে তিনি মোটেই বিজ্ঞানীদের সঙ্গে একমত নন। তাঁর কথায়, দূষণের জন্য মৃত্যু বাড়ছে এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে দূষণ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে এমন কথাই বলেন ভারতী।
তাঁঁর যুক্তি, দূষণের জন্য প্রতি বছর মানুষ মারা যাচ্ছেন, এই নিয়ে বিজ্ঞানীরা কোনও চূড়ান্ত তথ্যই পাননি। তাই দূষণের জন্য মৃত্যুসংখ্যা বাড়ছে, এ কথা ভিত্তিহীন। ভারতীর কথায়, অকালমৃত্যুর পিছনে অন্য কিছু কারণ রয়েছে। রোজকার জীবনযাপনের কায়দা, খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা আগে থেকে রয়েছে এমন রোগের কারণেই বাড়ছে মৃত্যুর হার। তবে, দূষণ যে মারণরোগের অন্যতম কারণ, সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন রাজ্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। তাঁর মতে, অকালে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার পিছনে অনেকগুলি কারণ রয়েছে। সেগুলির মধ্যে দূষণ একটি কারণ হতে পারে। ভারতী বলেন, দূষণ বাড়ছে বলে ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের জটিলতাও বাড়ছে। তবে এই কারণেই রোগীর অসময়ে মৃত্যু হচ্ছে, এমন প্রমাণ গবেষকদের কাছে নেই।
দূষণ কমানোর জন্য কেন্দ্র কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে কথাও বলেন ভারতী। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় মহিলারা এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার পান। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বাড়ির মহিলা ও শিশুদের দূষণের খারাপ প্রভাব থেকে বাচাঁতেই এমন প্রকল্প শুরু করেছিলেন মোদী। ফলে সরকার দূষণ কমাতে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এমন দাবিও ঠিক নয়।
২০১৫ সালে ল্যানসেট নামক বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকায় দূষণ নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। সেখানে অবশ্য বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন, ওই বছর দূষণের কারণে সারা বিশ্ব জুড়ে নয় মিলিয়ন মানুষ অকালে মারা গিয়েছিলেন। গবেষকদের কথায়, প্রতি ছয়টি মৃত্যুর মধ্যে একটি মৃত্যুর জন্য বায়ুদূষণ সরাসরিভাবে দায়ী। বিজ্ঞানীদের আরও দাবি, বিশ্ব জুড়ে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বায়ুদূষণ। এতে লাগাম না টানলে সংখ্যাটা আরও বাড়বে বই কমবে না। লোকসভায় বিজ্ঞানীদের এমন দাবিই নাকচ করে দিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।