আধুনিক জীবনযাত্রায় বেশিরভাগ কাজই করে দেয় যন্ত্র। ফলে কমে আসছে মাথা খাটানোর পরিসর। বেশিরভাগ মানুষ হয়ে পড়ছে অলস। এর থেকে দেখা দিতে পারে অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগ। এই রোগে মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়। ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়। উপসর্গ হিসেবে কমে আসতে থাকে মানুষের স্বাভাবিক কগনিটিভ ক্ষমতা। কোনও বিষয়ে চিন্তা করতে হলে যথেষ্ট পরিশ্রম অনুভূত হয়। খুব সহজ অঙ্ক বা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে না। এছাড়াও উপসর্গ হিসেবে অল্পেই রেগে যাওয়া, বিরক্তি প্রকাশ, মেজাজ হারানো ইত্যাদি দেখা যায়।
দীর্ঘদিন ধরে অনিয়িমত ও স্ট্রেসফুল জীবনযাপন করলে অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগ দেখা দেয়। হাঁটাচলা, ব্যায়াম ইত্যাদি প্রতিদিনের রুটিনে না থাকলেও দেখা দিতে পারে এই সমস্যা।
অ্যালঝাইমার্স রোগে মস্তিষ্কের কোষের চারপাশে অ্যামলয়েড নামক এক প্রোটিনের প্রাচীর তৈরি হতে থাকে। পাশাপাশি, টাউ নামক প্রোটিনও কোষগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এতেই কমতে থাকে কোষগুলোর কর্মক্ষমতা।
মুম্বাইয়ের মাসিনা হাসপাতালের নিউরোসার্জেন ডাঃ মাজহার আব্বাস তুরাবির কথায়, জীবনযাত্রার ধরনে পরিবর্তন আনলেই এর থেকে মুক্তি মিলতে পারে। এইচটি ডিজিটালকে আব্বাস পাঁচটি অভ্যাসের কথা জানালেন। মূলত এগুলোর জন্যই ডিমেনশিয়া দেখা দেয়।
১. সারাদিন বসে বসে কাজ: হাঁটাচলা ও ব্যায়াম মানুষের কগনিটিভ কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সারাদিন বসে বসে কাজ করার ফলে সেই কগনিটিভ সমস্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে নিয়মিত ব্যায়াম করলে হৃদযন্ত্র ঠিক থাকে। ভালো অনুভূতির হরমোন ক্ষরিত হয় যা মন ভালো রাখে।
২. অপর্যাপ্ত ঘুম: ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণে না হলে দিনের শুরু থেকেই যথেষ্ট ক্লান্ত লাগে। এছাড়াও সারাদিন ধরে কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুমোলে মস্তিস্কের কোষে টাউ নামক প্রোটিনটি জমতে শুরু করে। এর ফলে দেখা দিতে থাকে কগনিটিভ সমস্যা।
৩. শরীরে জল কমে যাওয়া: দিনে ৮ গ্লাস জল নিয়মিত খাওয়া উচিত। আমাদের শরীরে জলের ভাগ ৭০ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে কম জল খেলে ডিমেনশিয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
৪. ড্রাগ সেবন ও মদ্যপান: নিয়মিত ড্রাগ নেওয়া ও মদ খাওয়ার ফলেও অ্যালঝাইমার্স দেআআ দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রাগ ও মদ খেলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে।
৫. ফ্যাটযুক্ত ডায়েট: রোজকার ডায়েটের উপরেও নির্ভর করে অ্যালঝাইমার্স। বেশি পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন চিজ, মাখন, রেডমিট ডায়েট থেকে বাদ দেওয়াই শ্রেয়।