ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সাম্প্রতিক সময়ে খুব জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। ওজন কমাতে ও মেটাবলিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে এই ফাস্টিংয়ের জুড়ি মেলা ভার। বিনোদন জগতের অনেক তারকাই এই পদ্ধতি অনুসরণ করে জিরো ফিগার লুক পেয়েছেন। আলিয়া ভাট, মালাইকা অরোরা ও ভারতী সিংয়ের মতো নায়িকারা এই পদ্ধতিতেই অনেকটা ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীরকে নানারকম রোগ থেকেও দূরে রাখে। এই ফাস্টিংয়ে সাধারণত দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হয়। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে চলে এই উপোসের পর্ব। দুটি খাবারের সময়ের মধ্যে সাধারণত ১৪ থেকে ১৮ ঘন্টার ব্যবধান থাকে। দীর্ঘ সময় উপোস থাকার পর খাওয়া দাওয়া করা হয় বলে, একে অল্টারনেটিভ ফাস্টিংও বলে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং যেমন উপকারী, তেমন ক্ষতিকরও হতে পারে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং জন্মনিয়ন্ত্রক হরমোনের স্বাভাবিক কাজে বাধা দেয়। আট সপ্তাহ ধরে এই পরীক্ষাটি করা হয়েছিল। মেনোপজ হয়ে গিয়েছে ও মেনোপজ হবে এমন কিছু মহিলারা পরীক্ষায় অংশ নেন। এদের প্রত্যেককে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় চার ঘন্টার মধ্যে যা ইচ্ছে খাবার খেতে দেওয়া হয়। সময় পেরিয়ে গেলে পরেরদিন পর্যন্ত প্রত্যেকেই শুধু জল খেয়ে কাটিয়েছিলেন।
পুষ্টিবিদ অনুপমা মেননের কথায়, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং অনেকসময় ২২ ঘন্টা পর্যন্তও চলে। সাধারণত রাতের খাবার খাওয়ার পর এই ফাস্টিং শুরু হয়। পরদিন সকালে বা দুপুরে পরবর্তী খাবার খাওয়ার সময় ফাস্টিং শেষ হয়। মেননের কথায়, এই ফাস্টিংয়ের বিভিন্ন উপযোগিতা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি সঠিক পদ্ধতিতে করা হয় না। ফলে শরীরে নানারকম জটিলতা তৈরি হয়।
- শরীরের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু কখনও করা ঠিক নয়। অনেকেই মনে করেন, যত বেশিক্ষণ এই ফাস্টিং করা যাবে, তত তাড়াতাড়ি ওজন কমবে। কিন্তু এতে শরীরে অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। নষ্ট হতে পারে স্বাভাবিক ভারসাম্য। শরীর কতটা সময় উপোস সহ্য করতে পারছে, তার উপর নির্ভর করে উপোসের সময় ঠিক করা উচিত।
- মেয়েদের শরীরের নানারকম হরমোনের কার্যকলাপ সঠিক রাখতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। অনিয়মিত বা অল্প খাবার খেলে হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দেয়। ফলে মাসিকেও সমস্যা হতে পারে।
- দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে অ্যাসিডিটি ও বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডাঃ মেনন একইসঙ্গে জানান, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে হলে সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা করাও জরুরি।
- এক্ষেত্রে ডায়েটে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পাশাপাশি রাখতে হবে ফল, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার।
- এই সময় এমন খাবার খাওয়া জরুরি যা দীর্ঘক্ষণ উপোসের সময় শরীরের কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে পারে।