প্রতিটি মেয়ের ক্ষেত্রেই মা হওয়া একটি বিশাল ব্যাপার। তবে মা হওয়া যে একেবারেই সোজা ব্যাপার নয়, তা বোঝা যায় গর্ভাবস্থার সময়। গর্ভাবস্থা চলাকালীন ঠিক কোন কোন নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন, আন্তর্জাতিক গাইনোকোলজিকাল সচেতনতা দিবস উপলক্ষে সেটাই সকলকে জানালেন আভা সার্জি সেন্টারের অন্যতম স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বাণীকুমার মিত্র।
প্রথম ত্রই মাসিক থেকে ডেলিভারি পর্যন্ত, একজন মা যা খাবার খান, সেটাই শিশুর বিকাশ এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় শিশু এবং মায়ের পুষ্টির জন্য ঠিক কোন কোন খাবারগুলি প্রয়োজন, সেটাই জানালেন গাইনোকোলজিস্ট বাণী কুমার মিত্র।
ফলিক অ্যাসিড: প্রথম ত্রই মাসিকে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান হলো ফলিক অ্যাসিড। ফলিক অ্যাসিড নিউরাল টিউবের সমস্যার সমাধান করে এবং মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডের গঠনকে উন্নত করে। সবুজ শাকসবজি, মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড পেয়ে যাবেন আপনি।
(আরও পড়ুন: দুই বছরে কমালেন ১১৪ কেজি ওজন, 'রোগা হওয়ার সহজ উপায়' জানালেন ইউটিউবার)
প্রোটিন: শিশুর কোষ, পেশি এবং টিস্যুগুলির জন্য প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রয়োজন হয়। এই প্রোটিন পাওয়া যায় চর্বিহীন মাংস, দুগ্ধজাত দ্রব্য, ডিম, মসুর ডাল এবং টফুর মতো উদ্ভিদ ভিত্তিক খাদ্যে।
ক্যালসিয়াম: মায়ের পেটে থাকাকালীন শিশুর হাড়ের বিকাশের জন্য স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞরা মাকে দুগ্ধ জাতীয় পণ্য, বাদাম, সবুজ শাকসবজি এবং ফোর্টিফাইড উদ্ভিদ ভিত্তিক দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন।
আয়রন: গর্ভাবস্থায় মায়েরা যে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করে তা কাটিয়ে দেওয়ার জন্য এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ সঠিক রাখার জন্য আয়রনের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে পারে পালং শাক, লেবু এবং চর্বিহীন মাংস। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেলে রক্তাল্পতার সমস্যা দূর হয় এবং গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
হাইড্রেশন: গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে জল শুধুমাত্র শরীরের জলের ভারসাম্য রক্ষা করে তা নয়, খাবার হজম করতে এবং খাবারের পুষ্টি শরীরে শোষণ করতেও সাহায্য করে। দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জলপান করা প্রয়োজনীয় গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন।
(আরও পড়ুন: পুজোয় ঘুরে নিন চান্দেরি! শাড়ির জন্য খ্যাত এলাকায় রয়েছে খুনি-দরওয়াজা, ফোর্ট সহ বহু কিছু দেখার, রইল রুট ও খরচ)
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড : মাছ, আখরোট এবং তিসি বীজে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফাটি অ্যাসিড। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর মস্তিষ্ক এবং চোখের বিকাশের জন্য ভীষণ প্রয়োজনীয়।
মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট এবং ভিটামিন: ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, আয়োডিন হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দূর করার জন্য অনেক সময় চিকিৎসকের তরফ থেকে ভিটামিনের ট্যাবলেট দেওয়া হয়।
নিয়মিত ব্যায়াম: গর্ভাবস্থায় শুধুমাত্র বিশ্রাম নিলে সেটা শরীরের পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকারক তাই প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম অথবা মেডিটেশন করা ভীষণ দরকার মা এবং শিশু উভয়ের পক্ষেই।
সীমিত খাবার: গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে খাবারের প্রতি লোভ তৈরি হয় কিন্তু চেষ্টা করবেন একটি সীমিত পরিমাণে খাবার খাওয়ার। খিদে পেলে ফল, বাদাম এবং গোটা শস্যের মতো খাবারগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করবেন।