বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Heart of Pig: মানবদেহে শুয়োরের হৃদযন্ত্র বসানোর কাজ ২৫ বছর আগেই করেছিলেন ভারতীয় চিকিৎসক

Heart of Pig: মানবদেহে শুয়োরের হৃদযন্ত্র বসানোর কাজ ২৫ বছর আগেই করেছিলেন ভারতীয় চিকিৎসক

চিকিৎসক ধনী রাম বরুয়া। (ছবি: ফেসবুক)

স্বীকৃতি পাননি। বরং আইনি জটিলতায় পড়ে হাজতবাস করতে হয় অসমের চিকিৎসককে। 

অনেক সময়েই বহু মানুষের কাজ তাঁর নিজের সময়ে স্বীকৃতি পায় না। বিশেষ করে বিজ্ঞানের জগতে এমন উদাহরণ প্রচুর। আবিষ্কারকের আবিষ্কার স্বীকৃতি পেয়েছে তাঁর নিজের সময়ের অনেক পরে। এক্ষেত্রেও প্রায় তেমনই এক ঘটনা ঘটল। হালে মার্কিন মুলুকের চিকিৎসাবিজ্ঞানে বড় আলোচনার বিষয়— মানব শরীরে শুয়োরের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন। যে কাণ্ড ঘটিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মার্কিন চিকিৎসক, সেই একই কাজ ২৫ বছর আগে করেছিলেন এক ভারতীয়। অসমের ধনী রাম বরুয়া। যদিও স্বীকৃতি জোটেনি তাঁর কপালে। বদলে জুটেছিল আইনি জটিলতা এবং হাজতবাস।

গ্লাসগো থেকে ডাক্তারি পাশ করেন গুয়াহাটির ধনীরাম বরুয়া। ১৯৯৭ সালে মানুষের শরীরে শুয়োরের হৃৎপিণ্ড বসানোর অস্ত্রোপচার করেছিলেন এই চিকিৎসক। যদিও তার আগে সরকারের থেকে কোনও অনুমতি নেননি তিনি।

 

কী ঘটেছিল ঘটনাটি? 

তখন ধনী রামের বয়স ৪৭ বছর। তিনি কাজ করছিলেন কৃত্রিম হৃদযন্ত্র ও অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে। সেই সময়ে খোঁজ পান ভেন্টিলেশনে থাকা ৩২ বছরের এক রোগীর। মৃত্যু নিশ্চিত ছিল সেই রোগীর। তাঁর পরিবারের অনুমতি নিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন ধনী রাম। ডেকে নেওয়া হয় হংকংয়ের শল্য চিকিৎসক জোনাথন হো-কে। ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি গোপনে ১৫ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারে শুয়োরের হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের অংশ বসানো হয় সেই রোগীর দেহে। কিন্তু তার পরেই রোগীর দেহে দেখা দেয় ‘হাইপার অ্যাকিউট রিজেকশন’-এর সমস্যা। সাত দিনের মাথায় রোগী মারা যান।

 

এর পরে কী হয়?

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে সরকার তদন্তের নির্দেশ দেয়। ধনী রাম ও জোনাথনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৪০ দিন হাজতবাস করেন ধনী রাম। ইতিমধ্যে তাঁর হার্ট ইনস্টিটিউট ও রিসার্চ সেন্টার পুড়িয়ে দিয়েছিলেন কেউ। ধনী রামকে উন্মাদ অপবাদ দেওয়া শুরু হয়। তবুও ধনী রাম থামেননি। আবার গবেষণাকেন্দ্র গড়ে তোলেন। বাইপাস সার্জারির ক্ষেত্রেও নতুন কিছু আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু তাঁর কথায় কেউ পাত্তা দেননি। 

 

আবার বিতর্ক!

২০০৯ সালে তাঁর গবেষণাকেন্দ্রের কাছে দু’জনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। কাটা মাথা দু’টি উদ্ধার হয় গবেষণাকেন্দ্রের পাশেই। অনেকে দাবি করেন, ধনী রামই এই কাজ করিয়েছেন। 

 

কাজের শেষ পর্যায়:

২০১১ ধনী রাম এডসের ওষুধ আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেন। সেই দাবিও আমল দেননি কেউ। ২০১৫ সালে ১০০ জন রোগী তাঁর দেওয়া এডসের ওষুধে সুস্থ হয়েছেন বলেও দাবি ওঠে। সেটি নিয়েও কেউ মাথা ঘামাননি। পরের বছরই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এখনও হাসপাতালেই ভর্তি তিনি। 

 

ইতিহাসে প্রথম!

১৯৯৭ সালে প্রথম বার মানবদেহে শুয়োরের হৃদযন্ত্র বসানোর অস্ত্রোপচার করেছিলেন ধনী রাম। যদিও তার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি ছিল না তাঁর কাছে। আমেরিকায় হওয়া হালের এই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারটি হয়েছে সে দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে। এজন্য শুয়োরের জিনে ১০টি বদল করা হয়েছে। তেমন কিছু করেননি ধনী রাম। তবু এমন ভাবনা এবং উদ্যোগের জন্য তাঁকে নিশ্চয়ই মনে রাখবে চিকিৎসা বিজ্ঞান।

বন্ধ করুন