আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি বা শেষ দিনটি আসতে চলেছে আর কয়েক দিন পরই। ৩১ আশ্বিন এবার ১৭ অক্টোবর পড়েছে। এদিকে, বাংলাদেশের চট্টোগ্রাম এলাকায় এই আশ্বিন মাসের শেষলগ্নে অর্থাৎ আশ্বিন সংক্রান্তির উদযাপনে বিশেষ পার্বন পালিত হয়। স্থানীয় ভাষায় অনেকেই একে 'ব্রতের ভাতপুজো' বলে বর্ণনা করে থাকেন। মূলত, সূর্যদেব ও সংজ্ঞার পুত্র হুসাবে পরিচিত অশ্বিনী কুমারদ্বয়ের উদ্দেশে এই পুজো পালিত হয়। স্বর্গের চিকিৎসক অশ্বিনীকুমারের ব্রত হিসাবেও এই পার্বন প্রচলিত।
আশ্বিন সংক্রান্তির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে ‘গাড়ুর ডাল’। অনেকেই এই সংক্রান্তিকে ‘গাড়ু সংক্রান্তি’ আখ্যাও দিয়ে থাকেন। তবে গাড়ুর ডালের রেসিপি দেখার আগে, জেনে নেওয়া যাক, এই আশ্বিন সংক্রান্তি ঘিরে পার্বনের কিছু কথা।
আশ্বিন সংক্রান্তির পার্বন:-
আশ্বিন সংক্রান্তি ঘিরে একটি প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে। মনে করা হয়, আশ্বিন মাসে রান্না করা খাবার যদি কার্তিক মাসের প্রথম দিনে খাওয়া হয়, তাহলে মনস্কামনা পূরণ হয়। এই নিয়ে হর-পার্বতীর একটি কাহিনীও প্রচলিত রয়েছে। প্রচলিত রয়েছে,' আশ্বিনে রাঁধে, কার্তিকে খায়/ যেই বর মাগে, সেই বর পায়।' এই বিশ্বাস থেকে আশ্বিনের শেষ দিনের রাতে, গোটা রাত জেগে বহু বাড়ির মহিলারা রান্না করেন গাড়ুর ডাল। সুস্বাদু এই ডালে লাগে বহু মরশুমি সবজি। বলা হয়, কার্তিক মাসে মরশুম বদলের সঙ্গে নানান রোগের প্রাদুর্ভাবও ঘটে। তা থেকে সন্তান ও পরিবারকে দূরে রাখতে এই বিশেষ ডাল রান্না করে তা পান্তা ভাত দিয়ে কার্তিক মাসে খাওয়া হয়। একটি কলাপাতায় গুড় আর নারকেল দিয়ে তা গৃহদেবতাকে অর্পণ করা হয়। কীভাবে বানানো হয় এই ডাল? দেখে নিন।
গাড়ুর ডালের রেসিপি-
৩০০ গ্রাম মটর ডাল আগে ভিজিয়ো রাখুন অনেক ক্ষণ। এদিকে, মূলো, থোড়,মিষ্টিকুমড়ো,মিষ্টি আলু,বরবটি (বড় বড় করে কাটবেন),ঝিঙে, শিম, শাপলা, শালুক,কাঁকরোল, চালতা, জলপাই, মানকচু, গাঠিকচু, বিনস (বড় বড় করে কাটবেন), ডুমো-ডুমো করে কেটে নিন। এই উপকরণের মধ্যে লাগবে লাউশাকও। জলপাই, মূলো, থোড়, মিষ্টিআলু, শিম, শালুক, বরবটি, ও চালতা প্রেশার কুকারে জল নুন দিয়ে ভাপিয়ে নিন। এদিকে, একটি কড়াইতে শুকনো খোলায় ধনে, জিরে, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা একটু তাতিয়ে নিয়ে ভেজে গুঁড়ো মশলা বানিয়ে নিন। অন্যদিকে, জল দিয়ে প্রেশারে ডাল সিদ্ধ বসিয়ে নিন। কুমড়ো ঝিঙে ডালে আগে দিয়ে নিন। পরে বাকি সবজি ডালে দিন। ডাল সিদ্ধ হলে কালোজিরে চাইলে আলাদা করে ভেজে মেশাতে পারেন, কিম্বা আগে তৈরি করে রাখা ভাজা মশলা মিশিয়ে দিতে পারেন।