শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তাদের খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি তাদের দৈনন্দিন রুটিনের প্রতি খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। শৈশব এমন একটি সময় যখন শিশুরা সহজেই একটি রুটিনে চলে যায়, এমন পরিস্থিতিতে, বাবা-মা যদি শৈশব থেকেই তাদের কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করতে শেখান, তবে তারা এখন পর্যন্ত তাদের জীবনের একটি অংশ থেকে যায়। আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল সকাল, যখন আপনি বিছানা থেকে উঠবেন। এটি আপনার পুরো দিনটি কীভাবে যাবে তা নির্ধারণ করে। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদেরকে সকালে কিছু স্বাস্থ্যকর বিষয় মেনে চলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যা তাদেরকে শুধু শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থই রাখবে না বরং শিশুকে জীবনে অনেক শক্তিশালী ও সংগঠিত করবে। তাই আজ জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কথা, যা আপনার সন্তানকে অবশ্যই শেখাবেন।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় ঠিক করুন
রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তবে এর পাশাপাশি সকালে ঘুম থেকে ওঠার একটি নির্দিষ্ট সময় থাকাটাও জরুরি। শিশুরা যখন সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠে, তখন তাদের পুরো রুটিন সেই অনুযায়ী সামঞ্জস্য করা হয়। তাদের শরীরও সেই অনুযায়ী মানিয়ে নেয়। এমতাবস্থায়, তাদের জীবনকে সুসংগঠিত ও ভালোভাবে চলার জন্য সকালে ও একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করুন।
সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করলে অন্ত্র সঠিকভাবে পরিষ্কার হয়, যা শরীরে সক্রিয়তা আনে। এমন পরিস্থিতিতে আপনার শিশুকে সকালে প্রথমে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করার অভ্যাস করুন। এই একটি অভ্যাসের মাধ্যমে সে শুধু শারীরিক নয় মানসিকভাবেও ফিট থাকবে। সকালে কুসুম গরম পানি পান করলে তার পেট পরিষ্কার হবে, যা সারাদিন তার শরীরকে সতেজ রাখবে এবং সে তার সব কাজ ভালোভাবে করতে পারবে। এই স্বাস্থ্যকর অভ্যাসটি তার সারা জীবন খুব কাজে লাগবে।
সকালে যোগব্যায়াম করাও জরুরি
যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম এবং ধ্যান শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। শিশুরা শৈশব থেকেই যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং প্রাণায়াম করা শুরু করলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সকালের রুটিন শেষ করার পর শিশুকে যোগব্যায়াম, ধ্যান ও প্রাণায়াম করতে শেখান। যোগব্যায়াম শিশুকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী করবে, মেডিটেশন বাড়বে একাগ্রতা শক্তি, অন্যদিকে প্রাণায়াম শরীরে আনবে নতুন শক্তি।
স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা দিয়ে দিন শুরু করুন
সকালের নাস্তায় স্বাস্থ্যকর জিনিস অন্তর্ভুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সারা দিনের শক্তিকে প্রভাবিত করে। আপনার শিশুকে সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর মাধ্যমে শিশু সারাদিন শুধু এনার্জীই থাকবে না, স্বাস্থ্যকর জিনিস খাওয়ার অভ্যাসও গড়ে তুলবে। সকালের নাস্তায় আপনার শিশুকে ফল, শুকনো ফল ও শাকসবজি দিন এবং নিজেও একই জিনিস খান। এতে শিশু আপনার সাথে স্বাস্থ্যকর জিনিস খেতে শিখবে।
দিনের জন্য কাজের একটি তালিকা তৈরি করুন
জীবনকে সঠিকভাবে চালাতে হলে সংগঠিত হওয়া খুবই জরুরি। আপনি যদি সকালে পরিকল্পনা করেন যে আপনি কীভাবে আপনার দিনটিকে কাজে লাগাবেন, তাহলে দিনটিকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সকালে শিশুকে তার দৈনন্দিন কাজের তালিকা তৈরি করতে বলুন। এতে শিশুর মধ্যে সংগঠিত হওয়ার ক্ষমতাও গড়ে উঠবে এবং শিশুর ব্যবস্থাপনার দক্ষতাও উন্নত হবে, যা পরবর্তীতে তাকে বড় লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।