Bangla Naboborsho 1432: পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির অন্যতম প্রিয় উৎসব। দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজোর মতোই ষোলোআনা বাঙালিয়ানা জড়িয়ে আছে এই বিশেষ দিনটির সঙ্গে। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে হালখাতা করানোর রীতি প্রচলিত রয়েছে গোটা বাংলায়। কিন্তু এই দিনই কেন হালখাতা করানোর রীতি?
কীভাবে শুরু হল এই রীতি?
ঐতিহাসিকদের মতে, মুঘল সম্রাট আকবরের সময় থেকেই বাংলায় পয়লা বৈশাখ উদযাপনের রীতি শুরু হয়। আকবরের সময় প্রথমে হিজরি দিনপঞ্জি প্রচলিত ছিল। কিন্তু এই দিনপঞ্জি অনুযায়ী বঙ্গদেশে ফসলের চাষ হত না। ফলে খাজনা আদায়ে সমস্যা হত। দেখা যেত, যখন খাজনা দেওয়ার কথা, তখনও ফসল মাঠ থেকে তোলা হয়নি। তাই বঙ্গদেশে ফসল চাষের মরশুমের উপর ভিত্তি করে একটি নতুন দিনপঞ্জি বা ক্যালেন্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত নেন আকবর। সেই ক্যালেন্ডারের নাম ছিল ‘তারিখ-ই-ইলাহি’। পরে সেখান থেকেই বাংলা সনের শুরু বলে ধরা হয়। ফসল তোলার এই সময়ের মধ্যেই আসলে লুকিয়ে রয়েছে হালখাতা করার প্রথা।
খাজনা আদায়ের রীতি থেকে
চৈত্রের শেষ দিনে খাজনা আদায়ের রীতি ছিল। ততদিনে ফসল তোলা হয়ে যেত। ফলে খাজনা থেকে অন্যান্য বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার রেওয়াজও ওই দিন পালিত হত। স্বাভাবিকভাবে সংক্রান্তির পর দিন নতুন করে শুরু হত হিসেব রাখা। আর এই নতুন হিসেব রাখার জন্যই পবিত্র লাল শালুতে মোড়া নতুন খাতার প্রচলন হয়। বৈশাখের প্রথম দিনে এই খাতার পুজো করে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে শুরু হয় হিসেব রাখার প্রক্রিয়া। সেখান থেকেই শুরু হালখাতা করানোর রীতি।
আরও পড়ুন - Bangla Naboborsho History: আকবরের ক্যালেন্ডার থেকেই শুরু বাংলা নববর্ষ? পয়লা বৈশাখ কবে হয়ে উঠল উৎসব
হালখাতার অর্থ
হালখাতা শব্দের মধ্যে হাল কথাটির অর্থ হল নতুন আর খাতা কথাটি ব্যবসায়িক জগতের খুব পরিচিত একটি শব্দ। আর্থিক হিসেবনিকেশের যাবতীয় সন্ধান সেখানে থাকে বলেই এই খাতার গুরুত্ব যথেষ্ট। রীতি মেনে তাই আজও বছরের প্রথম দিনে লক্ষ্মী গণেশের পুজো করে এই খাতায় একটি স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে শুরু হয় হিসেব রাখার প্রক্রিয়া।