বেশ কয়েক বছর ধরে দূরপাল্লার ট্রেনে পরিবেশিত খাবার নিয়ে অভিযোগ আসছিল যাত্রীদের তরফ থেকে। যাত্রীদের সেই অভিযোগের কথা মাথায় রেখে অবশেষে বড় সিদ্ধান্ত নিল IRCTC। ভারতীয় রেলওয়ের বেস কিচেন গুলিকে ক্লাউড কিচেনে পরিবর্তিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, যার প্রথম পদক্ষেপ শুরু হয়েছে মুম্বইয়ের হাত ধরে।
আইআরসিটিসি ক্লাউড কিচেন
গত এক মাস ধরে ট্রেনে খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করার দায়িত্বে রয়েছে ক্লাউড কিচেন। পেশাদার ক্যাটারারদের দ্বারা পরিচালিত এই ক্লাউড কিচেনগুলি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় রেলের পশ্চিম বিভাগে কমপক্ষে ২০০টি ক্লাউড কিচেন স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাট।
(আরও পড়ুন: একটি বা দু’টি নয়, তিন তিনটি ব্রেসলেট দেখা গেল শাহরুখের কব্জিতে, দাম লক্ষাধিক)
মুম্বইতে কোথায় কোথায় হচ্ছে ক্লাউড কিচেন?
মুম্বইয়ের পাওয়াই, কুরলা, পানভেল, খানে এবং চেম্বুরে ক্লাউড কিচেন স্থাপন করা হচ্ছে। মুম্বইয়ের ক্লাউড কিচেন গুলির মধ্যে সবথেকে বড় ক্লাউড কিচেন হতে চলেছে কুরলা ক্লাউড কিচেনটি। এই ক্লাউড কিচেনে দৈনিক ৪০০০ জন মানুষের খাবার তৈরি করা যাবে অনায়াসে। এই কিচেনে তৈরি হবে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনার। এই ক্লাউড কিচেন গুলি ৭ বছরের চুক্তিতে কাজ করবে। সব থেকে বড় কথা, এই ক্লাউড কিচেনে মেনে চলা হবে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি। সিসিটিভির পর্যবেক্ষণে থাকা এই ক্লাউড কিচেন গুলিতে আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকবে।
ক্লাউড কিচেন তৈরি করার লক্ষ্য কী?
বছরের পর বছর যাত্রীরা খাবারের মান নিয়ে যেভাবে অভিযোগ দায়ের করছিলেন, সেই অভিযোগের কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া। রাজধানী এবং শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলিতেও যখন খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, তখন নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় রেল কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক বছরে মাসে গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে যার মধ্যে ১০ থেকে ১২টি গুরুতর অভিযোগ ছিল।
(আরও পড়ুন: বেড়াতে যাওয়ার তাড়াহুড়োয় শ্যাম্পু করা হয়নি? চিটচিটে চুলেও হবে এই ৩ স্টাইল)
ক্লাউড কিচেন দ্বারা খাবার সরবরাহ করার পর প্রতি মাসে অভিযোগ নেমে এসেছে ৭০ থেকে ৮০টি অভিযোগে, গুরুতর একটি বা দুটি। ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত আইআরসিটিসি প্রায় ১২০০০ ক্যাটারিং অভিযোগ রেকর্ড করেছিল। অবশেষে এই সমস্যার সম্মুখীন যাতে না হতে হয়, তার জন্যই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ক্লাউড কিচেন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত, IRCTC বর্তমানে ৫০টি ক্লাউড কিচেন পরিচালনা করছে। আরও ৯০টি ক্লাউড কিচেনের কাজ চলছে। এই রান্না ঘর গুলিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০০টি ট্রেনের যাত্রীদের জন্য রান্না করা হয় অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার থেকে ৪ হাজার মানুষের জন্য খাবার তৈরি করা হয় এই ক্লাউড কিচেন গুলিতে।