ভগবানকে তুষ্ট করতে নানারকম প্রণামী দেন ভক্তরা। কখনও সেই প্রণামী টাকা, আবার কখনও তা দামি গয়নাও হতে পারে। কেউ কেউ প্রণামী হিসেবে দান করেন আরও দামি কিছু। যত বেশি দামি জিনিস, ততই বেশি সেই প্রণামীর গুরুত্ব। তবে এবার প্রণামীর চিরাচরিত সংজ্ঞা ভেঙে দেওয়া হল। ভেঙে দিল মধ্যপ্রদেশের ভোপালের একটি মন্দির। নতুন নজির গড়েছে ভোপালের অন্নপূর্ণা দেবীর মন্দির। অভিনব পদক্ষেপ হিসেবে ওই মন্দিরে এবার থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রণামী দেওয়া যাবে। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
(আরও পড়ুন: লোনের ফাঁদ পাতছে সাইবার হ্যাকাররা! একগুচ্ছ অ্যাপকে প্লে স্টোর থেকে সরাল গুগল)
বেসরকারি সংগঠন হেচেল ফাউন্ডেশনের ডাইরেক্টর দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে। তিনি বলেন, এবার থেকে প্রণামী হিসেবে স্যানিটারি ন্যাপকিনও নেওয়া হবে। কী করা হবে এই ন্যাপকিনগুলো? দীপাঞ্জন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ন্যাপকিনগুলি স্থানীয় বস্তি এলাকার দুঃস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হবে। সুবিধাবঞ্চিতদের হাতে তুলে দেওয়া হবে স্যানিটারি ন্যাপকিন।
কামাক্ষ্যা দেবীর মন্দিরে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের চল রয়েছে। অম্বুবাচী উৎসব যে কারণে সেখানে বড় করে পালন করা হয়। শুধু তাই নয়, নারীদের ঋতুস্রাব নিয়েও যথেষ্ট সচেতন সেখানকার মানুষ। স্যানিটারি ন্যাপকিনের কার্যকলাপের জন্য বেশ পরিচিত উত্তর পূর্ব ভারতে অসমের এই মন্দির। এবার সেই ধারাকে মেনেই অন্নপূর্ণা মন্দিরে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রণামী হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রণামী হিসেবে পাওয়া ন্যাপকিন বিলিয়ে দেওয়া হবে সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের মধ্যে।
(আরও পড়ুন: ফোনের পাসওয়ার্ড ম্যানেজারও নিরাপদ নয় আর! কেন এই কথা বললেন বিশেষজ্ঞরা)
সাধারণত মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে বেশ কিছু ধারণা প্রচলিত রয়েছে সমাজের মধ্যে। হিন্দুদের ধর্ম মত অনুযায়ী, ঋতুমতী মেয়েদের পুজো করতে দেওয়া হয় না। ঋতু চলাকালীন কোনও মেয়েই শুভ কাজে যোগ দিতে পারেন না। সেই ধারণার কারণে মন্দিরে তাদের প্রবেশ নিষেধ। পাশাপাশি কোনও শুভ কাজও তাদের এড়িয়ে চলতে হয়। অন্যদিকে ঋতুস্রাব নিয়ে বেশ কিছু ছুঁতমার্গও রয়েছে।
সেই সবকিছুকে নস্যাৎ করেই এই সিদ্ধান্ত নিল অন্নপূর্ণা দেবীর মন্দির কর্তৃপক্ষ। দীপাঞ্জনের কথায়, অনেকেই টাকা দিয়ে ফুল কিনে দেন মন্দিরে। যা আদতে বৃহত্তর অর্থে কোনও কাজে লাগে না। তবে মন্দির কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণায় বেশ কাজ হয়েছে বলে জানান দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই মন্দিরে ১১ হাজারেরও বেশি স্যানিটারি ন্যাপকিন দান করেছেন ভক্তরা। এই ন্যাপকিনগুলিই বিলিয়ে দেওয়া হবে ভক্তদের মধ্যে।