পাহাড়ের উপর সুন্দর বিলাসবহুল বাড়ি, নীচে আটলান্টিক মহাসাগর। যে কোনও মুহূর্তে ধসে পড়ে যেতে পারে বাড়িটি। কিন্তু বাড়ির জানালায় বসে বাইরে তাকালে, দৃশ্যটা ভারী মনোরম। বাড়ির দামও সেই তুলনায় অনেকটাই কম। তাই সাত পাঁচ না ভেবে, মৃত্যুর ভয় না করে স্বপ্নের বাড়ি কিনেই ফেললেন ব্যক্তি।
ঘটনাটি আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস শহরের ইস্টহামের। যে ব্যক্তি বাড়িটি কিনেছেন তাঁর নাম ডেভিড মুট। বয়স ঠেকেছে ৫৯ বছরে। পেশায় একজন ইন্টেরিয়র পেইন্টার এবং ডিজাইনার। তিনি পাহাড়ের উপর যে বাড়িটি কিনেছেন, সেটি বালুকাময় এবং ইতিমধ্যেই ধসে পড়ে যাওয়ার পথে এসে দাঁড়িয়েছে বলে খবর। এই বিলাসবহুল তিন কামরার বাড়িটি আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে একটি পাহাড়ের উপর নির্মিত।
বিলাসবহুল বাড়িতে তিনটি বেডরুম, দু' টি বাথরুমের পাশাপাশি দু' টি গাড়ির জন্য একটি গ্যারেজও রয়েছে। পরিবেশ খুব মনোরম হলেও, বাড়িটি নিয়ে একটি সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে এটি কয়েক বছরের মধ্যেই পাহাড় থেকে পড়ে যেতে পারে। আর তা উপেক্ষা করে ৩৯৫ হাজার ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩.৩ কোটি টাকা দিয়ে বাড়িটি কিনে নেন ডেভিড।
কেন এমনটা করলেন ডেভিড
ডেভিড বলেছেন যে এই বাড়িটি যতদিন স্থায়ী হয় ততদিন উপভোগ করতে চান তিনি। অথচ বাড়িটি ধসে পড়া অংশ থেকে মাত্র ২৫ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী , ২০২২ সালে এই বাড়ির দাম রাখা হয়েছিল ১.১ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ১০ কোটি টাকা। কিন্তু এখন তার দাম মাত্র ৩.৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সেই অনুযায়ী দেখতে গেলে এখন ৬৭ শতাংশ কম দামে বাড়িটি পেয়েছেন ডেভিড। মজার বিষয় হল ৫৯ বছরের ডেভিড একেবারেই বাড়িটি ভেঙে পড়ার চিন্তা করছেন না। তিনি বলেন, 'জীবন খুব ছোট। দেখা যাক কি হয়। এটি শেষ পর্যন্ত সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার হলে, আমি বেঁচে থাকতেও তলিয়ে যেতে পারে। আর যদি ভাগ্য সহায় হয়, আমার চলে যাওয়ার পর হয়ত বাড়িটি তলিয়ে যাবে।'
ডেভিড আরও জানিয়েছেন যে ডিসেম্বরে বাড়িটি কেনার আগে, তিনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। বাড়ির চারপাশে পাথর ধসের বিষয়ে তিনি আগে থেকেই জানতেন। সমুদ্র সৈকতে ঘাস লাগানো থেকে শুরু করে ধস নামার গতিকে ধীর করার উপায়গুলিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। ডেভিড বলেছেন যে অন্য ব্যক্তিদেরও নিজের বাড়ি থেকে সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ করে দিতে চান। আসলে, শুধুমাত্র ডেভিডই নন। ডেভিড ছাড়াও এমন অনেকেই আছেন, যারা এই ধরনের এলাকায় বাড়ি কেনার আগ্রহ দেখিয়েছেন।