মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেটের ঘোষণায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচল দেশব্যাপী ছোট মাঝারি শিল্পের ব্যবসায়ীরা। কাল বাজেটে জানানো হল ছোট মাঝারি শিল্পের জন্য যে জরুরি আমানতের গ্যারান্টি (ইসিএলজিএস) স্কিম রয়েছে, সেটি আপাতত এক বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই স্কিমের কভার একলাফে ৫০,০০০ হাজার কোটি টাকা থেকে ৫ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হল। যার ফলে উপকৃত হবে হসপিটালিটি সেক্টরের মতো একাধিক শিল্প।
গত ডিসেম্বর মাসেই জানানো হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জরুরি আমানতে ৪.৫ লক্ষ কোটি পর্যন্ত বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে পরের অর্থবর্ষের জন্য। এই স্কিমের জন্য বিশেষ করে প্রায় ১.৬ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দের সুযোগ রয়েছে। বলাই বাহুল্য এই স্কিম নগদ অর্থের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা করেছে প্রায় ১০ মিলিয়ন ছোট মাঝারি শিল্পের জন্য। ৫৪.৫ মিলিয়ন চাকরি সুরক্ষিত থেকেছে এই অনিশ্চিত কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে। তবে এই অর্থ যথেষ্ট নয়, বরং ছোট মাঝারি শিল্পের জন্য বিলম্ব না করে আরও অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন।
একথা অনস্বীকার্য যে এই জরুরি আমানতের গ্যারান্টি তথা ইসিএলজিএস স্কিম বর্তমান ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’-এর অন্তর্গত, বাজেটে যে ২০ লক্ষ অর্থনীতিক স্টিমুলাস প্যাকেজের কথা বলা হয়েছে, তারই অন্তর্গত। গত বছর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে যখন এই স্কিমের কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, তখন এই খাতে ৩ লক্ষ কোটি টাকা মজুত ছিল ভাঁড়ারে। পরবর্তীকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয় ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা, আর পরবর্তী সময়ে চতুর্থ অর্থনীতিক স্টিমুলাস প্যাকেজের পর প্রায় সব মিলিয়ে এসে দাঁড়ায় ৬.২৯ লক্ষ কোটি টাকায়।
ছোট মাঝারি শিল্পের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই বিস্তর সাড়া পাওয়া গিয়েছে এই স্কিম নিয়ে। এর মধ্যেই প্রায় ১১.৫ মিলিয়ন ব্যবসায়ীর ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২.৮২ লক্ষ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এর সুবিধা পেয়েছে ৯.৫২ মিলিয়ন ইউনিট। এই ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অফিসার জানিয়েছেন, ‘এই স্কিমের জন্য ভীষণ উপকৃত হয়েছে সেই সব ছোটখাটো ব্যবসার, যাঁদের এই করোনাকালে পরিস্থিতি তথৈবচ। যদিও দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, কিছু ইউনিট, বিশেষ করে যারা সার্ভিস সেক্টরে রয়েছেন, এখনও আমানতের ক্ষেত্রে নগদের ভীষণ প্রয়োজন। কোভিড নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি এবং তাই এই স্কিমের সময় ও অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত।’